সেলফি তোলো সঙ্গে চলো
পিনাকী চৌধুরী।। এটা একবিংশ শতাব্দীর চরম ব্যস্ততার যুগ, হাতে হাতে স্মার্টফোন। মাস তিনেক আগে নন্দন চত্ত্বরে হাজির হয়ে দেখলাম কতিপয় টিন এজার সেলফি তুলতে ব্যস্ত। হ্যাঁ এখন সেলফি তোলাটা যেন একটা প্যাশন হয়ে গেছে। আর তারপরেই সেই সেলফি সোশ্যাল সাইটে প্রচুর মানুষ আপলোড করেন এবং অবশ্যই লাইক ও কমেন্টস এর বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু এই সেলফি আসলে কি ? Selfie ( নিজস্বী ) হল এক বিশেষ ধরনের আলোকচিত্র বা দল আলোকচিত্র, যা কিনা সাধারনত হাতে ধরা স্মার্টফোনের সাহায্য তোলা হয়। তাৎপর্যের বিষয় হল, এই সেলফি শব্দটি এসেছে কিন্তু ইংরেজি ‘ সেলফিশ ‘ শব্দ থেকে। কিন্তু বিশ্বে প্রথম কবে তোলা হয়েছিল এই সেলফি ? সে বহুকাল আগেকার কথা, তখন সাদা কালো ছবির যুগ ।
তদানীন্তন সময়ে রবার্ট কর্ণিলিয়াস ছিলেন একজন বিখ্যাত আলোকচিত্রী। ১৮৩৯ সালে তিনিই প্রথম নিজের একটি আত্মপ্রতিকৃতি তাঁর নিজের ক্যামেরায় ধারণ করেন। আর রবার্ট কর্ণিলিয়াস ঠিক যেন মুক্তিপথের অগ্রদূত! এখানে বলে রাখা ভাল যে, এই সেলফি শব্দটির প্রাথমিক ব্যবহার ২০০২ সালের আগে হয়তো পাওয়া যাবে, কিন্তু ২০০২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ার এক অনলাইন ফোরামে ( এবিসি অনলাইন) এই বহুচর্চিত সেলফি শব্দটি প্রথমবারের জন্য ব্যবহৃত হয়। আর তারপরেই যেন এক নতুন দিগন্তের সূচনা হল । বস্তুতঃ তারপর থেকেই যেন সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। হু হু করে বাড়তে থাকে সেলফির জনপ্রিয়তা।
২০১২ সালে টাইম ম্যাগাজিনে সার্বিক ভাবে এই সেলফি শব্দটি বছরের সেরা দশ শব্দের মধ্যে অন্যতম শব্দ হিসেবে বিবেচিত হয়। অবাক পৃথিবী ! বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা অভিনেত্রী এবং অনেক সেলিব্রেটি এই সেলফি তুলতে পছন্দ করেন। এছাড়াও দেশের তাবড় ও পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদরা সেলফি তুলতে ব্যস্ত থাকেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একজন সেলফি ভক্ত। আর আমজনতার কথা যদি বলেন তাহলে বলবো আমাদের দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ সেলফি তুলে , সেই ছবি সোশ্যাল সাইটে আপলোড করেন। আর নিজেকে বিজ্ঞাপিত করবার সবথেকে সহজ মাধ্যম হল ফেসবুক। পরিশেষে একটা কথা বলি, যেখানে সেখানে, পাহাড়ে উঠে অথবা রেললাইনে সেলফি তোলাটা একেবারেই অনুচিত, দুর্ঘটনায় কবলে পড়েন মানুষ।