জলবিষয়ক তিনটে কবিতা।। রাজীব দে রায়
চোরাকুঠুরির ভেজানো দরজার
কবজাগুলোয়
গাঢ় মরচের পরত জমেছে
রক্তদলার মত লালচে ছোপগুলো
যে কোনো সময়েই
বসন্তের খরখরে পাতার মত
ভেঙে যেতে পারে
তার আগে তুমুল বৃষ্টি এসে
ছোপগুলোকে একবার ভিজিয়ে দিক
যাবতীয় লবন দ্রবীভূত হয়ে
ঠিক কোনো একদিন
প্রতিদিন নদীর কাছে এসে
বড় পাথরটির গায়ে হেলান দিয়ে
অনেকক্ষণ বসে থাকি
জলের ভিতর থেকে ঘূর্ণির মত
পাক খেতে খেতে একটি
সোনালি মাছ উঠে এলেই
না জানি কী আশঙ্কায়
এক দুর্বোধ্য ভাষা
আমার জিহ্বাগ্রে সমবেত হয়
নিঃসাড়ে চিৎকার করে উঠি
সেইসব চিৎকার
উথালপাতাল তরঙ্গের মত
ফুলে-ফেঁপে ওঠে
আবার নিমেষেই বুদ্বুদ ফেনার মত
শূন্যে মিলিয়ে যায় অবয়বহীন
সহসা মৃত্যুর মত দুলে উঠল
মধুক্ষরা বিভাজিকা
এখানে কোনো রহস্যময় কাঁটাতার নেই
বর্ষণসিক্ত চুল ছুঁয়ে সদাহাস্যময় বাতাস
নেমে এসেছে সুগভীর অবতলে
সুগন্ধী হলুদ উপত্যকায় ডানা মেলেছে
রহস্যরঞ্জিত প্রজাপতি
ধীরেধীরে সমগ্র অববাহিকায়
আমি জানি
শঙ্খিনী নদীর কাছে এলেই
মানুষের যাবতীয় অহং তুবড়ে যায়