ফ্যাসিবাদ নিপাত যাক! বহুত্ব রক্ষায় একসঙ্গে গাইলেন ‘একুশের সঙ্গীত’
“তুমি পুরাণকে বলো ইতিহাস, ইতিহাসকে বলো পুরানো
তোমার ভক্তিতে দাগ রক্তের তুমি কাউকেই ভালবাসো না
তুমি বেসাতি করতে এসেছ, দেশপ্রেমের কিছুই জানো না”
গানের প্রতিটা লাইন ইঙ্গিত দিচ্ছে দিল্লির রাজপাটের দিকে। স্পষ্ট ভাষায় বলতে গেলে সরকারের বিরুদ্ধে। বিধানসভা ভোটের লড়াই বাংলায় যেন অস্তিত্ব বাঁচানোর লড়াই। একুশের গণসঙ্গীত। এই সঙ্গীতে গলা মিলিয়েছেন ঋদ্ধি সেন, সুরঙ্গনা, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, রূপঙ্কর বাগচী, অনুপম রায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, রেশমি সেন, দেবলীনা, সব্যসাচী চক্রবর্তী, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তও।
এই সঙ্গীতের পেছনের কারিগর হলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। আর দু’দিন বাদেই ভোটপুজো শুরু। লড়াইয়ের ময়দানে অগ্নিগর্ভ বাংলা। সেখানেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কলরব তুললো ‘নিজেদের মতে নিজেদের গান’। এই গান মনে করিয়ে দিল ‘শিব ঠাকুরের আপন দেশে আইন কানুন সর্বনেশে’।
এই গানের লক্ষ্যই হল বহুত্ববাদ রক্ষা করা। আমাদের ভারত বিভিন্ন বৈচিত্র, ভাব ভালোবাসার দেশ। সর্ব-ধর্ম সমন্বয়ের দেশ। এখানে মিথ্যাচার, ঘৃণার আগুন জনমতকে গলা টিপে মেরে ফেলে। আর সেই সময়েই জেগে ওঠা নাগরিকদের কর্তব্য। গানটির মধ্যে দিয়ে তাঁরা এটাই বুঝিয়ে দিলেন, সবাইকে এক হতে হবে।
প্রসঙ্গত, কয়েক বছর ধরেই বাক স্বাধীনতা খর্ব করা, নিজের মতের ওপর জোর করে মতবাদ চাপিয়ে দেওয়া। হিংসার রাজনীতি ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এইসব কিছুর বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়ানো। ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির’- এর মন্ত্রে বিদ্রোহ ঘোষণা করে তাঁরা একযোগে গাইলেন- ‘আমি এই দেশেতেই থাকব’। তবে এই গানটিকে ঠিক বামপন্থী বা ডানপন্থী তকমা সেটে দেওয়া যায় না। বরং বলা ভাল, এঁরা দেশের মুক্ত চিন্তার পক্ষেই সওয়াল করেছেন। প্রবীণদের সঙ্গে নবীন প্রজন্ম পথে নেমে দাবি করেছেন গর্বিত ভারতের বহুত্ববাদ নীতি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এই গানের প্রতিটা শব্দ ও লাইন তথা মিউজিক ভিডিওর ভিস্যুয়ালাইজেশনেই সুস্পষ্ট, এই প্রতিবাদ গেরুয়া তন্ত্রের বিরুদ্ধে।