লেখকের রোজনামচা
পিনাকী চৌধুরী।। নিদারুণ দারিদ্র্যের অন্ধকারে হারিয়ে গেলে এবং অবশ্যই সামাজিক অপবাদ মাথা পেতে মেনে নিলেই বোধহয় একজন লেখকের জীবন শুরু হয় চল্লিশ বছর বয়সে। তবে অবশ্যই সমাজের সেই প্রান্তিক ,অনামী লেখকের পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তার সাথে লেখকের এক সূক্ষ্ম অনুভূতি সম্পন্ন মন থাকাও একান্ত প্রয়োজন। হয়তো টাকার অভাবে লেখকের হাঁড়ি চড়ে না, ধার দেনায় জর্জরিত হয়ে পাওনাদারের অভিসম্পাত লেখকের গায়ে লাগে। ওদিকে আবার বারে বারে পত্রিকা সম্পাদক সেই লেখকের ‘ লেখা’ বাতিল বলে গণ্য করেন ! সব মিলিয়ে লেখকের যেন নাজেহাল অবস্থা! কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননা। লেখক দিস্তা দিস্তা কাগজ খরচ করে লিখে চলেন , লিখেই চলেন।
দীর্ঘদিন এভাবেই বয়ে চলে সেই লেখকের রোজনামচা ! কিন্তু কি আশ্চর্য ! আগুন পুড়ে দগ্ধ হয়ে লেখকের যেন পুনর্জন্ম হল ! পাদপ্রদীপের আলোয় এসে সেই লেখকের পাঠক সংখ্যা যেন উত্তোরত্তর বেড়েই চলে ! বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সম্পাদকীয় দফতর থেকে লেখককে লেখা পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয় ! হ্যাঁ এভাবেই সেই লেখক তাঁর আবেগ অনুভূতি, প্রেম অপ্রেম, অতিশয় স্পর্শচেতনা ভাষা দিয়ে সুন্দর গল্প রচনা করেন ! এভাবেই হয়তো লেখকের কলম কথা বলতে শুরু করে! বিখ্যাত সেই লেখকের নাম তখন দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ে! হ্যাঁ , অতীতের সেই প্রান্তিক অনামী লেখকের আজ ফ্যান ফলোয়িং মারাত্মক ! মায়ের পেট থেকে বেরিয়ে হঠাৎ করে কেউ লেখক হন না ! দীর্ঘদিন ধরেই সাহিত্যের প্রতি নিবেদিত প্রাণ হয়ে এবং লক্ষ্য স্থির রেখেই হয়তোবা লেখকের পা থাকে বাস্তবের মাটিতে , কিন্তু তাঁর মনটা কল্পনার আকাশে ডানা মেলে !