সন্ধ্যা গড়াতেই শঙ্খধ্বনি
পিনাকী চৌধুরী।। হিন্দু রীতি অনুযায়ী আমাদের বাঙালী সমাজে সন্ধ্যা ঘনাতেই ঘরে ঘরে শঙ্খধ্বনি শোনা যায়। আসলে শঙ্খধ্বনি কিন্তু একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে আনে। এই রীতি বহু প্রাচীন। তবে সকালে কখনই শাখ বাজানো উচিত নয় । কিন্তু কেন ? আসলে মহাভারতে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সময় সকালে শঙ্খধ্বনি করে যুদ্ধের সূচনা হত এবং সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের পরে পুনরায় শঙ্খধ্বনি করে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করা হত।তাই সকালে কখনও শাঁখ বাজানো উচিত নয়। পাশাপাশি প্রতি সন্ধ্যায় ঘরে ঘরে শঙ্খধ্বনি হলে সেই বাড়িতে কখনও নেতিবাচক শক্তি প্রবেশ করতে পারে না এবং পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে এবং শঙ্খধ্বনি অবশ্যই পরিবারের মঙ্গলকামনায় করা হয়। পাশাপাশি এই শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে দেবতাদের আহ্বান জানানো হয়।
শৈশবকাল থেকেই এই প্রতিবেদক লক্ষ্য করেছে যে, মোট ৩ বার শঙ্খধ্বনি করা হয় । কিন্তু কেন ? আসলে তিন বার শঙ্খধ্বনি করাটাই রীতি এবং তাতে দেবাদিদেব মহাদেব এবং বিষ্ণু সন্তুষ্ট হন । তবে তিন বারের বেশি শঙ্খধ্বনি করলে দেবতারা রুষ্ট হন এবং তাতে পরিবারের সদস্যদের বিপদ অনিবার্য হয়ে ওঠে। তবে পরিবারের মঙ্গল কে না চায় ! তাইতো আজও সূর্যাস্তের ম্লান আলো যখন পরিবারের দালানে জাফরি কাটে, ঠিক তখনই সেই পরিবারের মহিলা সদস্য তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বেলে তিন বার শঙ্খধ্বনি করেন তাঁর পরিবারের মঙ্গলকামনায় ! ভারত আধ্যাত্মিকতায় সমৃদ্ধ দেশ , আর সেই দেশের এই ধরনের বিভিন্ন ধর্মীয় রীতিনীতি আজ এই একবিংশ শতাব্দীতেও খুবই প্রাসঙ্গিক ।