হোয়াটস অ্যাপ ইউনিভার্সিটি

পিনাকী চৌধুরী।। হ্যাঁ, ঠিক এই নামেই রঙ্গ করে রসিক নাগর আখ্যা দিয়ে থাকেন। সত্যি, সব তীর্থের সেরা তীর্থ যেন এই হোয়াটস অ্যাপ। এখানে কোনো ওয়াচ টাওয়ার নেই, নেই কোনো নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি। পাঠক আপনি জানলে অবাক হবেন যে, সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষের মানুষ সবথেকে বেশি হোয়াটস অ্যাপ ব্যবহার করেন। মূলত হোয়াটস অ্যাপ কর্তৃপক্ষ ভারতের বাজার থেকে প্রভূত পরিমাণ অর্থ আয় করে। ইন্টারনেটের দৌলতে এখন যেন সত্যি বিশ্ব হাতের মুঠোয়। মুহূর্তের মধ্যে কোনো সংবাদ প্রেরণ অথবা বার্তা পাঠাতে সত্যিই অপরিহার্য এই হোয়াটস অ্যাপ। কিন্তু তাই বলে ফেক নিউজ ? হ্যাঁ , অজস্র ফেক নিউজ হোয়াটস অ্যাপের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক শ্রেণীর অসাধু মানুষজন উদ্যেশ্য প্রণোদিত ভাবে এইধরনের ফেক নিউজ বা গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছেন হোয়াটস অ্যাপে। আর আপনি আমি সেসব খবরের সত্যতা যাচাই না করেই মনের আনন্দে ফরোয়ার্ড করে বসছি ! হ্যাঁ, মুহূর্তের অসচেতনতায় এই ভাবে বিপদ ঘনিয়ে আসছে।

বিশেষত এই ‘২১ সালে যখন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছিল। শুধু কি তাই ? অতীতেও এইরকম ফেক নিউজের রমরমা চলেছিল হোয়াটস অ্যাপে। কতো যে বিখ্যাত মানুষজনের মৃত্যু সংবাদ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল তার ইয়ত্তা নেই ! অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছিল যে খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা । এখন তো হাতে হাতে স্মার্টফোন । তাই অনেকেই হোয়াটস অ্যাপে পর্ণগ্রাফি দেখতে রীতিমতো অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন । একবার ভিডিও ডাউনলোড করলেই হল ! চোখের সামনে ভেসে ওঠে রগরগে উত্তেজক কিছু দৃশ্য !

সামাজিক অবক্ষয় কিনা জানিনা, কিন্তু এটাই এখন দস্তুর ! এছাড়াও বিশিষ্ট মানুষজনের অজস্র মিম ঘুরে বেড়াচ্ছে এই হোয়াটস অ্যাপে ! হাসা ভাল, কিন্তু অপরের ওপর হাসা হাসি মোটেও সমর্থন যোগ্য নয়। এছাড়াও সুপার ইম্পোজ করা কিছু বিকৃত ছবিও এখানে ভাইরাল হয় । অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ জোকস এখানে ভাইরাল হয়। হোয়াটস অ্যাপে প্রেম নিবেদন এমনকি পয়সার বিনিময়ে রতি ভিক্ষাও চাওয়া হয় ! একটি কি বড়জোর দু’টো রাতের গল্প ! আর তারপরেই সেই প্রেমের দফারফা ! মুহূর্তের মধ্যেই ব্লক করে দেওয়া তো আকছার শোনা যায় ।

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page