আজি যে রজনী যায়

বুদ্ধদেব হালদার

 

আকাশ কালো হয়ে রয়েছে। কেমন থম মেরে আছে প্রকৃতি। বৃষ্টিটা একনাগাড়ে হচ্ছে। যদিও এখন একটু থেমেছে। কিন্তু কিছুক্ষণের জন্য। আবার হয়তো শুরু হবে মুহূর্ত পরেই। বর্ষাকালের এই তো চরিত্র।

মাটির ঘরের ছোট্ট একটা জানলা। সেখান থেকে মুখ বাড়াচ্ছে জগু। জগু অর্থাৎ জগন্নাথ বাজগা। সনকার ছেলে। বয়েস আট। তিন কেলাসে পড়ে। খিদেতে তার পেট জ্বলে যাচ্চে। অথচ তার মা কিংবা দিদির কোনও হেলদোল নেই। তারা ভেতরের গোয়াল ঘরের কাছে রাঁধতে বসেচে। একবাটি মুড়ি অনেকক্ষণ আগে তাকে দিয়ে গেছিল। কিন্তু মুড়িতে কি খিদে মেটে? তাই অভিমানে জানলার কাঠে মুখ রেখে বাইরের বড়ো তেঁতুলতলী আমগাছটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে সে। বেশ কিছুক্ষণ হলো বৃষ্টি থেমেছে। কিন্তু গাছেদের পাতায় জমে থাকা জল টপ টপ করে এখনও ঝরে পড়ছে। ওদের বাড়ির সামনেটা কাদায় ভরে আছে। বাড়ির আশেপাশে বনজঙ্গল আর ঝোপঝাড় ছাড়া অবশ্য কিছু নেই। এই হেঁতালদুনি গ্রামে লোকজন এমনিতেই কম। তার উপর এটা ভাদ্র মাস। অর্থাৎ কদিন পরেই দুর্গাপুজো। এই সময় গ্রামের সমস্ত মরদ বাইরে কাজে বেরোয়। প্যান্ডেলের কাজে তারা সব কলকেতায় থাকে। কেউ কেউ ভিন শহরে যায়। এসবই সে দিদির মুখে শুনেছে। তার জামাইবাবুও তো প্যান্ডেলের কাজে বাইরেই রয়েচে। সেই সুদূর উড়িষ্যায়।

ওদের বাড়ির কাছেই একটা পুকুর রয়েছে। পুকুরের ওপারে নলখাগড়ার সবুজ ঝোপ। উলুবন। এছাড়া জলজ ঘাসের জঙ্গল। আর এপারের যে সরু রাস্তাটা রয়েছে, সেটা ধরে সোজা হাঁটা দিলে তাদের ইস্কুলের সামনে গিয়ে ওঠা যায়। ওদের ইস্কুলের নাম তরুণসংঘ নৈশ বিদ্যালয়। গ্রামের লোকে অবশ্য ‘নাইট ইস্কুল’ বলে। কেন বলে তা জানা নেই জগুর। সে দুদিন স্কুলে যায়নি। এত বৃষ্টিতে কেউ যায় নাকি? তাছাড়া গিয়েই বা কি হবে? বর্ষার সময় স্কুল বন্ধ থাকে। ছেলেমেয়েরা যে যার ঘরেই থাকে। কেউ বাইরে বাহির হয় না।

‘এই জগা। শুনে যা দিকি একবার।’

দিদির গলা পাওয়া গেল। ভেতরের ঘর থেকে ডাকছে তাকে।

সেদিকে একবার তাকাল জগন্নাথ।

দিদিকে ভেঙচি কেটে নকল করে মৃদু স্বরে বলল, ‘শুনে যা দিকি একবার? কেন? কী হয়েচে? শুনতে যাবো কেন শুনি?’

নিজের মনেই বিড়বিড় করে বলে উঠল সে।

কোনও সাড়া না পেয়ে এবারে আরও দ্বিগুণ স্বরে ডাকল তার দিদি- ‘কী রে জগা? কানে কতা যায় নে তোর? ডাকলুম তো ইদিকে?’

জানলা থেকে মুখ সরিয়ে বিছানা ছেড়ে লাফিয়ে নীচে নামল। মাটির ঘরদোর। দেওয়াল ঘেরা জায়গার মধ্যেই তাদের ছোট্ট বাড়ি। একটা গোয়ালঘর। মাটির দালান। প্রশস্ত উঠোন। উঠোনের মাঝখানেই তুলসী মঞ্চ। সেখানে রাধাকৃষ্ণের মাঝারি দুটো মূর্তি রয়েচে। এছাড়া বাড়ির লাগোয়া দুটো গাছ। একটা সবেদা। অন্যটা নিমগাছ। দুটোই খুব বড়ো। সদর দরজার পাশেই রয়েছে কুয়ো। স্বচ্ছ কাচের মতো টলটল করছে তার জল। এই বর্ষাতে কুয়োর জল মুখে এসে উঠেছে। উপরের চারি ছুঁয়ে ফেলেছে জল। সেদিকে গিয়ে একবার কী খেয়ালে ঝুঁকে দেখল জগন্নাথ। তারপর গোয়ালঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। জগুর দিদির নাম কমলা। তিনি বিবাহিতা। তাদের সঙ্গে এই বাড়িতেই থাকে। বরের নিজের কোনও ঘরবাড়ি নেই। মামারবাড়ি হেলাফেলায় মানুষ হয়েচে। বিয়ের পর আর মামারা তার ভার নিতে চাননি। অগত্যা বউকে শ্বশুরবাড়ি রেখে শহরে কাজ করতে গেছে। বছরে দু-তিনবার আসে। আগেরবার অগ্রহায়ণে যখন জামাইবাবু এসেছিল, তার জন্য দুটো হাফপ্যান্ট, একটা সোয়েটার, উলের টুপি আরও কত কী এনেছিল। এবারে বোধহয় পুজোর পর আসবে। ওই তো পাগলাদাদুর কাছে খবর এয়েচে। জগুর মা শুনে এসেচে সেদিন।

কলমীশাকের ঝুড়িটা মাচা থেকে নামিয়ে সনকা বললে-‘কই রে জগু, যা তো বাপ। ভোলার দোকানতে তিনটাকার তেল নে আয়। শাকগুলো ভেজে নিই। অনেকদিন তে রয়েচে। পুকুরের জমিতে তুলেচিলুম। সে আর খাওয়া হয় নে।’

মায়ের হাত থেকে একটা কড়ির বাটি নিয়ে কমলা ভাইয়ের হাতে দিয়ে সস্নেহে বলল, ‘যা সর্ষের তেলটা নে আয় দিকি। দেরি করবি নে। আবার জল আসবে একুনি। আকাশের যা অবস্তা তাতে তো আর টেকা যায় নে। যা, তাড়াতাড়ি যা।’

কমলার গলার স্বরে যেন বর্ষাপ্রকৃতির এই স্বাভাবিক আচরণের প্রতি তীব্র বিরক্তিও ছিল। বস্তুত একনাগাড়ে বৃষ্টিতে বাইরেটা যেন জলে ভেসে গেছে। গ্রামবাংলার পুকুরঘাট রাস্তা সব এক হয়ে রয়েচে। আলাদা করে বোঝার কোনও উপায় নেই। জগন্নাথ বাটি নিয়ে তেল আনতে গেল।

ভোলা মণ্ডলের দোকান কাছেই। বনতুলসির বেড়াগাছ দিয়ে ঘেরা বাড়ির ভেতরেই মুদিখানার সমস্ত সরঞ্জাম পাওয়া যায়। গ্রামের অনেক লোক একেনতে খুচরো কেনাকাটি করে। অবশ্য যাদের অনেক টাকাকড়ি রয়েচে, তারা জামতলার হাট থেকে সমস্ত বাজার করে নিয়ে আসে। একথা জগন্নাথ জানে। তাছাড়া ভোলার দোকানে জিনিস ওজনে মারে। একথাও সে জানে। দিদির মুখেই শুনেচে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে পেছনের বাঁশবনটা পেরলেই দোকান।

জগন্নাথ আকাশের দিকে তাকায়। মেঘ কালো হয়ে আছে। দূরের খেজুর গাছের সারির উপর দিয়ে সাদা বক উড়ে যাচ্ছে। আর সামনের মাঠগুলোয় আউশ ধানের সবুজ জাওলা দেওয়া রয়েচে। ব্যাঙ ডাকচে চাদ্দিকে। দিনের বেলাতেই যেন রাতের অন্ধকার। ওই তো কাছেই ভোলার দোকান। সে হাঁটা দিল। গোড়ালি অবধি পা ঢুকে যাচ্ছে কাদায়। কোনও মতে পা চালিয়ে তাড়াতড়ি পৌঁছল মণ্ডলদের বাড়ি। ভোলা নামের ব্যক্তি ঘরের ভেতর থেকে উঁকি মেরে জগুর দিকে তাকাল- ‘ও কচি, কী নিবি তুই?’

‘তিনটাকার সর্ষের তেল।’

‘জায়গা এনিচি?’

‘এই যে।’ কড়ির সাদা রঙের বাটিটা তুলে দেখায় জগু।

‘দে যা একেন।’

‘এই নেও।’

বাটিতে টিন থেকে তেল ঢেলে দিল ভোলানাথ। তার হাতে তিনটে একটাকার কয়েন দিয়ে জগন্নাথ বলল, ‘সর্দার পাড়ায় মাছ উঠেচে?’

ভোলা মণ্ডল চোখ কুঁচকে বলল, ‘যাসনি যেন ওদিকে। শালারা খুব ঢ্যামন। মারধোর করবে। বলবে মাছ চুরি করতে এইচিস।’

জগু মাথা নাড়িয়ে বলল, ‘না, না। যাবুনি। আমি এমনি জিগেস করতেচি তোরে।’

বাটিতে তেল নিয়ে সে বেরিয়ে এল। কাদায় ধীরে ধীরে পা ফেলে এগিয়ে গেল। কাছেই একটা সোঁদালি ফুলের গাছ। সেটাকে বাঁয়ে ফেলে এগোতেই মাথায় টপ টপ করে কয়েক ফোঁটা জল পড়ল। হয়তো গাছ-গাছালির পাতা থেকে হাওয়ায় জল উড়ে এসে পড়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই তার ভুল ভাঙল। জোরে বৃষ্টি নামছে। দূরের ধানখেত সাদা হয়ে আবছা হয়ে গেল হঠাৎ। বৃষ্টি যেন সেদিক থেকে ধেয়ে আসছে তার দিকে। ওদিকে তাকিয়ে সে জোরে পা চালাল। কাদা রাস্তায় বড়ো বড়ো পা ফেলল জগু। বাড়ির সদর দরজায় পৌঁছনোর আগেই বৃষ্টিতে ভিজে জপজপে হয়ে গেল তার শরীর। দরজার কাছে এসে বাটিটা নামিয়ে রেখে বলল, ‘আমি নাইতে গেলুম।’

ভেতর থেকে তার দিদি দৌড়ে এসে বলল, ‘ভাই থাম। একসাথে যাব। আমারও অনেক কাজ আচে। এক্কারে বাসন ধুয়ে দুজনে চান করে আসব।’

‘বিষ্টিতে ভিজবিনি?’

‘চল। একটু ভিজি।’

দরজা থেকে বেরিয়ে এল কমলা।

তার দিদির অবস্থা দেখে ভেতর থেকে সনকা চিল্লে উঠল, ‘ও মাগি তুইও শুরু করিচিস? যা শিগগির জগুরে চান কইরে আন। ব্যামো হলে কোন বাপটা দেকবে ক দিকি।’

জগু আর তার দিদি কেউই কোনও কথা কানে নিল না। সনকা আবারও চিল্লে তাদের গাল দিতে লাগল, ‘ওলাউটোর ছাওয়াল গুলো বিষ্টিতে তোদের গা কি বারো-তেরো হলো নাকি?’

জগন্নাথ সনকাকে জিভ বের করে মুখ ভেঙচি দিল। বারান্দার কাদায় হুটোপুটি করতে গিয়ে সনকা পা পিছলে আছাড় খেল ঠিক সেই মুহূর্তে। তাই দেখে দু ভাই-বোনের সে কী অট্টহাসি! সনকা বিড়বিড় করতে করতে শেষটায় নিজেও হেসে ফেলল।

জগন্নাথ বলল, ‘মীড়া পিসিদের ঘাটে যাবি?’

কমলা শাড়ির কোঁচড় কোমরে গুঁজে নিয়ে বলল, ‘কেন রে?’

‘ওদের পুকুরের পাশে যে বড়ো বাতাবি গাচটা আচে ওইটে নজরে এনেচিস?’

কমলা মাথা নাড়ায়।

জগন্নাথ চোখ বড়ো বড়ো করে দিদির দিকে তাকায়। দুহাতের তালু প্রসারিত করে বলে- ‘এই বড়ো বড়ো লেবু হয়েচে। অ্যাকন এই বিষ্টির সময় কেউ থাকেনে ওকেন। চল না নে আসি।’

সনকা ওদের কথা শুনতে পেল। সে ভেতর থেকে আবার চিল্লে উঠল- ‘ও ওলাউটো রে লোকের গাছে হাত দিলে তোর মুড়ো ছেঁচব আজকে।’

মায়ের গলা শুনতে পেয়েই দুজনে একহাত জিব বের করল।

সনকা দরজার কাছে এসে বলল, ‘কমল, তোকে না কইচি তুই ওর কতায় নাচবিনি। এঁটো বাসন তিনটে পড়ে আচে। ককন ধুইবি? যা, নে যা এক্কুনি। সঙ্গে ওরে নাইয়ে নে আয়।’

ভাইকে নিয়ে কমলা চলে গেল। এঁটো বাসন গুলো জগা নিজের মাথায় তুলে নিয়েছে।

মাটির রাস্তায় কাদা চ্যাপচ্যাপ করছে। কিছুদূরে গিয়ে কমলা রাগতভাবে বলল, ‘তুই মা রে শুনিয়ে বলতে গেলি ক্যা?’

‘আমি কী কয়েচি?’

‘বাতাবি নেবু পেড়ে আনতুম। এখন কি আর পারব? মা শুনে নেচে। আনলেই চুলের টিকি টেনে ছিঁড়ে দেবেনি?’

‘নুকিয়ে রাকব।’

কমলা ভাইয়ের কথা নকল করে ভেঙচি কেটে বলল, ‘নুকিয়ে রাকব। ছাই রাকবি। পারবি নে তুই। মা ঠিক ধরে ফেলবে। ও মাগির টিকটিকির চোক।’

‘তাওলে ওকেন ছাড়িয়ে খাব। চল, কেউ তো নেই। জানতে পারবেনি কেউ।’

কমলাদের বাড়ি থেকে দুটো পুকুর পেরিয়েই মীড়া সমাদ্দারের ঘাট। এ ঘাটে কেউ বড়ো একটা আসে না। তার কারণ আর কিছুই নয়। পুকুরটাকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে রেখেছে বড়ো বড়ো গাছ। আর সেজন্যেই গাছের পাতা পড়ে পুকুরের জল নষ্ট হয়ে গেছে। তাই স্নানের উপযুক্ত নয় এই পুকুর। অবশ্য চারটে ঘাটের মধ্যে একটাতে এখনও বাসন মাজা, কাপড় কাচা কিংবা স্নান করার মতো নিত্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো মাঝেমধ্যে করা হয়। তাই ওই ঘাটেই গিয়ে উঠল তারা। গাছের গুঁড়ি কেটে ঘাটের সিঁড়ি বানানো হয়েছে। বর্ষায় পুকুরের জল সবকটা সিঁড়ি ডুবিয়ে দিয়েচে। তাই সানক তিনটে ধুয়ে ওপরের এক জায়গায় থুয়ে রাখল।

জগন্নাথের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘বৃষ্টি আরও জোরে নামচে বুজলি?’

‘তুই কী বলিস?’

‘গাছ থেকে কটা নেবু পেরে নেই চল।’

‘আর মা?’

‘ও একটু ভ্যাজর ভ্যাজর করুক গে। তাতে কী হবে?’

‘ঠিক কয়েচিস।’

পুকুরের পাড়েই কিছুটা দূরে বাতাবি লেবু গাছের সারি। পরপর ছ-সাতটা বড়ো বড়ো গাছ। লেবুপাতার গন্ধে যেন মেতে আছে তটভূমি। বৃষ্টির বেগ ক্রমশ বাড়ছে। কমলা চট করে একটা গাছে উঠে পড়ল। জগু নীচ থেকে বলল, ‘হেই বড়োটা পাড় দিদি।’

‘কোনটে?’

‘হেই যে তোর মাথার দক্ষিণে।’

‘এইটে?’

‘না রে কানি। ওই যে আরেট্টু ওপরেরটা।’

‘এইটে?’

‘হাঁ। ওইটে। পেড়ে নে।’

নীচে মাটির উপর দিয়ে বৃষ্টির জল বয়ে যাচ্ছে। গাছ থেকে চারটে বড়ো বড়ো বাতাবি নীচে ফেলে দিল কমলা। নিঃশব্দে একটা লাফ দিল গাছ থেকে। ঝুপ করে মাটিতে পড়েই চারদিকে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকিয়ে নিল।

জগন্নাথকে বলল, ‘কেউ দ্যাখে নে তো?’

‘না রে ভিতু।’

‘আর তোর তো খুব সাহস? তাই ভূতে ভয় পাস রাত হলে।’

তার ভাই কোনও কথা না বলে লেবু চারটে গামছায় বেঁধে নিল।

কমলা বলল, ‘এক কাজ কর না জগু। ওগুলা বাড়ির সদরে রেকে আয়। আমরা গে তারপর ভেতরে নে যাব।’

তার ভাই এবারেও মুখে কোনও কথা বলল না। লেবু চারটে গামছায় বেঁধে নিয়ে দৌড় লাগাল।

কমলা পুকুরে গিয়ে ডুব দিল। সে চান করে উঠব উঠব করচে ঠিক তখনই জগু ফিরে এসে বলল, ‘দি মা একটা শোলমাছ ধরেচে।’

কমলা পুকুরের একগলা জলে দাঁড়িয়েই একগাল হেসে বলল, ‘কদ্দিয়ে রে?’

‘বাড়ির পেচনের ডোবায় বাইচিল।’

‘কতখানি রে?’

‘হেই অ্যাতবড়ো!’

দু-হাত অনেকটা ফাঁক করে দেখাল জগন্নাথ। ওর দিদির যেন বিশ্বাস হল না ওর কথা খানায়।

সে বলল, ‘মিছে বকিসনি।’

‘তুই দেখবি চ।’

‘তুই আয় চান করিয়ে দিই।’

‘আমি নিজে করব।’

‘ঠিক আচে। তাড়াতাড়ি নে। বেশিক্ষণ ডুবোস নে।’

জগন্নাথ পুকুরের জলে ঝাঁপ মারল। সাঁতার কেটে মাঝখানে গেল। আবার ফিরে আসল। ওর দিদি যেখানে দাঁড়িয়ে স্নান করছিল সেখানেই গা-হাত-পা ডলতে লাগল। দিদির সম্মুখে এসে চিন্তিত মুখে হঠাৎ করে সে বলল, ‘কিন্তু রান্না কী দিয়ে হবে বল দিকি?’

তার দিদি আশ্চর্য হয়ে জিগেস করল, ‘কেন?’

‘মা বললে তেল-মশলা কিচুই নেই।’

‘ও হবেখন। তুই ভাবিস নে। আয় দিকি আমার কাচে?’

জগন্নাথ ওর দিদির বুকের কাছে এল।

ভাইকে জড়িয়ে ধরে ডুব দিল কমলা।

 

 

চলবে…

 

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page