ইরাণের ঘটনা ভুলে গেছেন নাকি বামপন্থীরা?
আয়াতোল্লা খোমেইনির মতো মৌলবাদী ধর্মীয় নেতা ফকিরের ছদ্মবেশে বামপন্থীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজাকে হারিয়ে সেই যে সিংহাসনে বসলেন, খোমেইনি তন্ত্রের ‘সায়েন্টিফিক’ ফ্যাসিজম সেই থেকেই চলছে রমরমিয়ে।
আর সেই তথাকথিত মহাবিপ্লবের পরে খোমেইনির মৌলবাদী মোল্লা বাহিনী কমিউনিষ্টদের হয় খুন করেছিল নাহলে দেশ থেকে কুকুরের মতো তাড়িয়ে ছেড়েছিল। কমিউনিষ্টরা ছিলো খোমেইনির সিঁড়ি, রাজাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে। আজ সেখানে আর কোনো বিপ্লবের কথা ভাবতেই পারে না নতুন জেনারেশন। কুচলে খুন করে দেবে কোনোরকম বিরোধিতা দেখলেই।
“আমাদের ওখানে বিপ্লব আর হয়তো জীবনেও হবে না। মহাবিপ্লব আমাদের কাছে বিরাট ধোঁকা।”এই কথাগুলো শুনেছিলাম নাসিরের কাছে। এক ইরানী বন্ধু। শেয়ার করতে করতে আক্ষেপ করছিল নাইজেরিয়ার এক পানশালাতে। “রাজাই ভালো ছিল জানো। ইরাণ কি আধুনিক হয়ে গেছিল! ইনফ্রাস্ট্রাকচার কী যে ডেভলপ করেছিল। খোমেইনি গনতন্ত্র নিয়ে সুড়সুড়ি দেখালো। গরীবের পাশে দাঁড়াবার টোপ দেখালো। কমিউনিস্টরা বিশ্বাসও ফেলল। বাকিটা…ইতিহাস। কয়েকশো বছর পেছিয়ে গেলাম আমরা”।
কথা বলতে বলতে বুঝেছিলাম সোশালিজম-কমিউনিজমের প্রতি সহানুভূতিশীল ও, কিন্তু মুখ খুললেই খুন হয়ে যাবে, তাই ভাবতেই পারেনা কোনো প্রতিবাদের কথা।
এই বাংলায় আব্বাস সিদ্দিকির মতো সাম্প্রদায়িক ধর্মগুরুর সঙ্গে হাত মেলানো আবার ঐতিহাসিক ভুল।
ভোট যুদ্ধে জিততে চিরশত্রু কংগ্রেসের সঙ্গে বামপন্থীদের হাত মেলানোটাই হাস্যকর, কোনো এথিক্সের ধার ধারে না ভোটের হিসেব ছাড়া। এখন আবার বিজেপি-আরেসেস এর মতো সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে লড়াই করতে বামপন্থীদের যদি আরেক সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে হাত মেলাতে হয় “ধর্মনিরপেক্ষতা” র ধ্বজা তুলে, সেটা বাংলার জন্য চরম দুর্ভাগ্যজনক এবং কোনোভাবেই সমর্থন করিনা।
লিখছেন – অতনু প্রজ্ঞান