উত্তর সম্পাদকীয় লেখার মাশুল, সাসপেন্ড হতে পারেন অজন্তা বিশ্বাস
তৃতীয়পক্ষ ওয়েব- প্রয়াত সিপিএম নেতা অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করতে পারে সিপিএমের দলীয় নেতৃত্ব। ‘জাগো বাংলা’য় উত্তর সম্পাদকীয় লেখার জন্য তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। দলের নিয়ম অনুসারে, অজন্তা বিশ্বাস যে অপরাধ করেছেন, তার জন্য সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত সাসপেন্ড শাস্তি হতে পারে। অথবা তিন মাসের জন্য সাসপেনশন হতে পারে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মনে প্রশ্ন উঠছে, তবে অনিল কন্যার ওপর কি কিছুটা হলেও নরম আলিমুদ্দিন?
ইতিমধ্যেই তাঁর ‘শাস্তি’র সুপারিশের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এরিয়া কমিটি অর্থাত্ যে পার্টি কমিটিতে অজন্তা বিশ্বাসের সদস্যপদ রয়েছে, সেখান থেকে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর কাছে বিষয়টি আসে। অধ্যাপকদের সংগঠনের তরফ থেকে আসা এই সুপারিশকে সবুজ সঙ্কেত দেয় জেলা সম্পাদক মণ্ডলীও। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই কলকাতায় জেলা কমিটির বৈঠক হবে। আর সেখানেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর তারপর সিপিএম গোটা বিষয়টি সামনে নিয়ে আসবে।
‘জাগো বাংলায়’ ২৮ – ৩০ জুলাই পর্যন্ত ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারী শক্তি’ শীর্ষক উত্তর সম্পাদকীয় লিখেছিলেন সিপিআইএমের সদস্য অজন্তা। সেখানে কংগ্রেস ও বাম নেত্রীদের ভূমিকা সংক্রান্ত বিষয় তুলে ধরেন তিনি। তার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক। সিঙ্গুর নিয়ে দলীয় লাইনের বাইরে গিয়ে প্রকাশ করেন তার মত।
একদিকে ‘শত্রু পক্ষে’র সংবাদপত্রে লেখা। অন্যদিকে সিঙ্গুর নিয়ে দলীয় লাইনের বাইরে মত। যা একজন পার্টির সদস্য হিসেবে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা। এমনকি, জাগো বাংলায় লেখা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে সেখানে মূল্যায়ন নিয়ে বেশ কয়েকদিন অবস্থানে অনড় ছিলেন অনিল তনয়া।
বাংলার রাজনীতিতে নারী শক্তির অবদান নিয়ে লিখলে স্বাভাবিক অর্থেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা আসবে। সেই মূল্যায়ন নিয়েই অজন্তা করেছেন। এতে ভুল বা অন্যায় কোথা থেকে আসছে সেটাই তার ব্যক্তিগত পরিসরের বক্তব্য।
সিপিএম স্থির করেছিল, অজন্তা বিশ্বাস ক্ষমা না চাইলে তাঁকে বহিষ্কারের পথে হাঁটবেন তারা। যদিও সিপিএম নেতৃত্ব থেকে এটাও বলা হয়েছিল, অজন্তা ক্ষমা চাইলে বা অবস্থান বদল করলে শাস্তি কিছুটা কমতে পারে।
এরপরেই নিজের অবস্থান বদলান অজন্তা বিশ্বাস। নিজের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি দিয়ে এরিয়া কমিটির কাছে এবং কলকাতা জেলার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন অজন্তা। ভবিষ্যতে এরকম কোনও বিষয় থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন এবং সতর্ক থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে এও জানিয়েছিলেন, তাঁর এই কর্মকাণ্ডে কেউ দুঃখ পেলে তিনি দুঃখিত।
এরপরেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকেন সিপিআইএম নেতৃত্ব।দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, অনুমতি ছাড়া ‘জাগো বাংলা’য় লেখা, সিঙ্গুর নিয়ে দলীয় অবস্থানের বিপরীতে হাঁটা-সহ আরও যে অপরাধ করেছেন, তার জন্য শাস্তি পেতেই হবে। আর সেটি সাময়িক সাসপেনশন করা হবে। এক্ষেত্রে তিনমাসের সাসপেনশন করা হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
ছবি- ফেসবুক