এসেনশিয়াল অয়েল ও ইনফিউজড অয়েলের মধ্যে কি কোনও পার্থক্য আছে?

তৃতীয়পক্ষ ওয়েব- প্রাচীন কাল থেকেই ত্বক-চুলের যত্নে এবং শরীর সুস্থ রাখতে চিকিৎসা হিসেবে অ্যারোমাথেরাপি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন অ্যারোমাথেরাপির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল রকমারি এসেনশিয়াল অয়েল। ত্বক-চুলের যত্নে তো বটেই, স্ট্রেস থেকে অ্যাংজাইটি, এমনকী ডিপ্রেশনের মতো সমস্যার প্রকোপ কমাতেও অ্যারোমাথেরাপির উপর ভরসা রাখেন অনেকেই। কিন্তু জানেন কি, বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন নানা ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল। জেনে নিন কিভাবে।

এসেনশিয়াল অয়েল আসলে কী?

বিশেষ কিছু গাছের পাতা এবং ফুল থেকে সংগ্রহ করা অয়েলকে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শুদ্ধ করে এরপর তৈরি হয় এসেনশিয়াল অয়েল। পাতা এবং ফুলের নির্যাস থাকার কারণে এই অয়েল যেমন সুগন্ধিযুক্ত হয়, তেমনই নানা উপকারী উপাদানও মজুত থাকে এতে। আর সে কারণেই এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করলে পাওয়া যায় নানা উপকার।

একাধিক গাছের পাতা এবং ফুল থেকে তৈরি হয় নানা ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল। যেমন, পুদিনা পাতা থেকে যে অয়েল তৈরি হয় সেটি ক্লান্তি দূর করে এবং হজম ক্ষমতার উন্নতিতে কাজে আসে। আবার ল্যাভেন্ডার অয়েল নিমেষে স্ট্রেস কমায়। স্যান্ডালউড অয়েল যেখানে নার্ভকে শান্ত রাখে এবং মনোযোগ বাড়ায়, সেখানে গোলাপ ফুল থেকে তৈরি এসেনশিয়াল অয়েলকে কাজে লাগালে অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমে। আবার ক্যামোমাইল অয়েল, টি ট্রি অয়েল এবং লেমন অয়েল, মাথা যন্ত্রণা কমাতে এবং অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে।

এসেনশিয়াল অয়েল ও ইনফিউজড অয়েল কি এক?

এসেনশিয়াল অয়েল তৈরি হয় গাছের পাতা অথবা ফুলের নির্যাস থেকে। আর এই তেল খুব কড়া হয়। তাই সরাসরি ত্বকের উপরে এসেনশিয়াল অয়েল লাগাতে বারণ করা হয়। অন্যদিকে ইনফিউজড অয়েলে ফুল বা গাছের নির্যাস ব্যবহার করা হয় না। তার পরিবর্তে ফুল,পাতা,গুল্ম মেশানো হয় নানা ধরনের তেলের মধ্যে। এই তেল অপেক্ষাকৃত হালকা হয়। বেশি মাত্রায় ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। আর একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে। সেটি হল, কালো কাঁচের শিশিতে এসেনশিয়াল অয়েল না রাখলে সহজে তা খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু ইনফিউজড অয়েল যে-কোনও ধরণের শিশিতেই রাখা যেতে পারে।

কীভাবে বানাবেন এই তেল

 রোজ ইনফিউজড অয়েল: অর্ধেক কাপ গোলাপের পাপড়ি থেঁতো করে নিন। এরপর থেঁতো করা গোলাপের পাপড়িগুলি একটা পাত্রে নিয়ে এতে হাফ কাপ সুইট আমন্ড অয়েল মিশিয়ে মুখটা বন্ধ করে দিন। এবার ভাল করে নাড়ান, যাতে গোলাপের পাপড়ির সঙ্গে তেলটা মিশে যেতে পারে। এভাবে ২৪ ঘন্টা একটা অন্ধকার জায়গায় রেখে দিন। পরের দিন মিশ্রণটা ছেঁকে নিয়ে গোলাপের পাপড়িগুলো ফেলে দিন। এরপরে আবার অর্ধেক কাপ গোলাপের পাপড়ি নিয়ে ওই তেলে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। সময় হয়ে গেলে খেয়াল করবেন গোলাপের পাপড়িগুলি ঠিক মতো তেলে মিশে গেছে কিনা। যদি এরকম হয়, জানবেন আপনার রোজ ইনফিউজড অয়েল তৈরি। একটা কাঁচের শিশিতে ঢেলে রেখে ব্যবহার করুন।

 জ্যাসমিন-ল্যাভেন্ডার ইনফিউজড অয়েল: অর্ধেক কাপ করে জুঁই এবং ল্যাভেন্ডার ফুল নিয়ে ভাল করে থেঁতো করে নিন। এবার সেই ফুলগুলি একটা পাত্রে নিয়ে তাতে এক কাপ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল মিশিয়ে মুখটা ভাল করে বন্ধ করে দিন। ৪৮ ঘণ্টা পরে তেলটা ছেঁকে নিয়ে ফুলের পাপড়িগুলি ফেলে দিন। একটা কাঁচের শিশিতে তেলটা ঢেলে রেখে দিন। ব্যবহার করুন প্রয়োজন অনুযায়ী।

 

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page