গাড়ি চলে গেলেও মনে রেশ থেকে যায়
পিনাকী চৌধুরী– ‘এই মামণি , কোন সেলুনে চুল কাটো?’ চমকে উঠলেন? না না, আমি গাড়ির পিছনের দিকের সেইসব বহুল প্রচলিত শব্দবন্ধগুলোর কথাই বলছি! বাস্তবে আমাদের সমাজ সংস্কৃতি অথবা রাজনীতি নির্ভর কিম্বা ধর্মীয় কিছু টুকরো টুকরো কথামালা যেন সসম্মানে বাসের পিছনের দিকে যেন জ্বলজ্বল করে! তবে আজ নয়, বরং গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশক থেকেই এইধরনের শব্দবন্ধের প্রভাব ফেলে। এইতো সেদিন পার্ক স্ট্রিটের ক্রসিংয়ে আমাদের বাসটি যানজটে আটকে গেল, আর আমাদের ঠিক আগের বাসের পিছনে লেখা ‘ দেখবি আর জ্বলবি – লুচির মত ফুলবি ‘!
বাস্তবে বাসের পিছনের দিকে এইধরনের লেখা আসলে একশ্রেণীর মানুষের বিচিত্র পেশা ! আয় তেমন একটা হয়না, সারাদিনে মেরেকেটে পাঁচশো অথবা ছয়শো টাকা । তাও আবার রঙ তুলির খরচ নিজের! জরুরী অবস্থার সময় এইরকম একটি লেখা বহুদিন চলেছিল, ‘ কথা কম – কাজ বেশি !’ এছাড়াও ‘ তোমার হিংসা – আমার উন্নতি !’
খুব সংক্ষিপ্ত, অথচ আপামর জনসাধারণের মনে অতি সহজেই গেঁথে যায় এইধরনের শব্দবন্ধগুলো ! এছাড়াও ধর্মীয় শব্দবন্ধের প্রাধান্য আজ বাসের পিছনের দিকে দেখতে পাওয়া যায় ‘ টাকা মাটি মাটি টাকা !’ আরও একদিন আমার চোখ আটকে গেল ‘ জীবন চাকা ঘুরছে অবিরত – একদিন তা ফেটে যাবে টায়ারের মতো !’ এছাড়াও তো ‘ HORN OK PLEASE ‘ আছেই । তবে শুধুমাত্র বাসের পিছনেই নয় , বলা ভাল বড় বড় ট্রাকের পিছনেও এইধরনের শব্দবন্ধগুলো সকলের নজর কাড়ে ! আরও আছে ‘ ছেলেকে জীবন দাও , বাইক নয় – মেয়েকে শিক্ষা দাও, মোবাইল নয় !’ এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সতর্কতামূলক লেখা ‘ ছিঃ , তুমি এতো কাছে !’ অথবা ‘ ট্র্যাফিক আইন মেনে চলুন !’ আর এইসব বিচিত্র শব্দবন্ধগুলো আমি বাসের সিটের জানালার ধারে বসে প্রত্যক্ষ করি , হয়তোবা আপনিও !