জানেন কি এই পৃথিবীতেই আছে সত্যিকারের রূপকথার রাপুঞ্জেলের গ্রাম !
রূপকথার সেই লম্বা চুলের রাপুঞ্জেলকে মনে আছে। যে একটা জঙ্গলের ভেতর দূর্গের মধ্যে একা থাকতো। আর তাঁর কাছে আসতো রাজপুত্র। যে ওই বিশাল দূর্গের উপর উঠত রাপুঞ্জেলের দীর্ঘ চুলের সাহায্যে। কিন্তু এবার ফিরে আসি রূপকথার জগত থেকে রিয়েল লাইফে। দক্ষিণ চীনের গুয়াংক্সি এলাকায় হুয়ানগ্লু নামে এক গ্রাম আছে। যা ‘দীর্ঘ চুলের গ্রাম নামে পরিচিত’।
প্রাচীন চীনের এক ঐতিহ্য হল এই গ্রাম। যেখানে গ্রামের প্রায় প্রত্যেক মেয়ের চুল দীর্ঘ। গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে পৃথিবীর সব থেকে লম্বা চুলের গ্রাম হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। যাঁদের দীর্ঘ কালো চুল ২.১ মিটার অর্থাৎ ৬.৮ ফিট লম্বা। আর তাঁরা এই দীর্ঘ মজবুত চুল শেষ বয়স অবদি ধরে রাখে।
এই দীর্ঘ মজবুত চুলের রহস্যটা কি? তাঁরা তাঁদের চুল ফারমেন্টেড করা চালের জলে। আর এই দুধ সাদা তরল পদার্থই বা ভাতের মাড়ই হলো এদের দীর্ঘ চুলের রহস্য। আর এখানকার প্রিন্সেস থেকে শুরু করে গ্রামের অন্যান্য মহিলারা সেই প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার করে আসছেন।
তাঁদের কাছে চুল একটা পবিত্র জিনিস। যারা লাল রঙের ড্রেস পড়েন। এমনকি তাঁরা চুল নিয়ে ভীষন রকম অবসেসড। এমনকি তাঁদের চুল, স্বামী এবং সন্তান ছাড়া অন্য কেউ নাকি দেখতে পান না। সারা জীবনে একবারই চুল কাটে তাঁরা। সেটা তাঁদের ১৮তম জন্মদিনে। এই কেটে নেওয়া চুল তাঁকে গিফট করা হয়, যখন তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর সৌভাগ্য, ধনসম্পত্তি নিয়ে আসার জন্য।
সাধারণ মানুষের কাছে চুল খোলা তাদের কাছে অপমানকর ব্যাপার।১৯৮০ সালের পর কিছুটা হলেও নিয়ম পরিবর্তন হয়। এটাই এদের কাছে উপার্জনের একটা পথ হয়ে দাঁড়ায়। সাধারন কাজের পর এই গ্রামের ৮২টি ঘরের মধ্যে ৪০০ জন গ্রামবাসী এবং রাপুঞ্জেলরা গান এবং বিভিন্ন পারফরমেন্স করে। এতে ট্যুরিস্ট-দের ভিড় বাড়ে এবং তাঁদের উপার্জনও হয়। মাসে একবার এই অনুষ্ঠানগুলি তাঁরা করে।