বইও মানুষের কাছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য, লকডাউনে বই পৌঁছক পাঠকের কাছে

তৃতীয় পক্ষ ডেস্ক- ২০২০-র লকডাউন অনেক কিছুই শিখিয়ে গেছে মানুষকে। আর তাই এবারও লকডাউন শুরু হওয়ার সাথে সাথে যেভাবে লাইন পড়ছে মদের দোকান আর মুদীর দোকানের সামনে। এতে করে সাধারণের ক্ষোভ বাড়ছে আরও। তবে বইপাড়া কিন্তু বন্ধ। আর এ নিয়ে সরকারের কোনও হেলদোলও নেই। তবে হ্যাঁ কিছু কিছু মানুষের কাছে বই ভীষণ প্রয়োজনীয় এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্যই বটে। আর যেহেতু লকডাউনের এই সময় সমস্ত কিছুই বন্ধ থাকছে, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া। তাই কিছু কিছু প্রকাশক পাঠকের কাছে বই পৌঁছে দেওয়ার জন্যে নিয়েছেন বিশেষ উদ্যোগ।

আর তার মধ্যে আত্মজা পাবলিশার্স-এর অরুণাভ চ্যাটার্জীর বক্তব্য, বই মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় সামগ্রী। আগামীকাল থেকে কলেজ স্ট্রীটে শুরু হওয়ার কথা ছিল, সে অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করি আমরা। পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটা অর্ডার ডেলিভারিও করা হয়েছে। আমরা চাই এই লকডাউনেও বই পৌঁছক মানুষের হাতে। বেলঘরিয়া রথতলা থেকে  সুইগি’র মাধ্যমে এই সার্ভিস চালু করা হচ্ছে।

অন্যদিকে সোপান পাবলিশার্স-এর জয়জিৎ মুখার্জীর কথায়, লকডাউনে আপাতত সব বন্ধ করে রাখতে হয়েছে। কারণ পুলিশের ই-পাস নিয়ে তবেই বই পৌঁছে দেওয়া যাবে। আর সব ক্ষেত্রে সম্ভবও নয়। যাতায়াতের অসুবিধের কারণে কর্মীরা অনেকেই যেতে চাইছেন না। গতবার আম্ফান, লকডাউনে অবস্থা খুবই খারাপ। সরকারের উচিৎ ছিল বইপাড়ার জন্যে কিছু করার। খানিকটা অভিযোগের সুরেই বললেন, মদের দোকান খোলা, সেখান থেকে অনলাইনে ডেলিভারি পেতে পারে মানুষ, কারণ সেখানে সরকারের লাভ রয়েছে। আর বই কবে লাভের মুখ দেখিয়েছে। ঝড়ের মুখ থেকে উঠতে না উঠতেই ফের সেকেন্ড ওয়েভ করোনার। এখন শুধু বাঁচার লড়াই। কাজ করে যেতে হবে। হয় করোনাতে মরব, আর নাহলে না খেতে পেয়ে। অবস্থা যে খুব সঙ্গীন। তবে সরকার নিশ্চয়ই কিছু ভেবেই এটা করেছেন। বাঁচব তবেই না কাজ করব। আপাতত আমাদের বই আটকে রয়েছে ডিটিডিসি’তেও। কারণ তাঁরাও চাইছেন না বই ডেলিভারি করতে। আশা করা ছাড়া উপায় নেই, সব ঠিক হয়ে যাক, মানুষ ফিরুক নিজস্ব ছন্দে।

এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকাশক জানিয়েছেন, ‘সরকার কবেই বা ভেবেছেন বইপাড়ার কথা। এই লকডাউনে কতজনের পেটে খিল পড়বে, সে আমরাই জানি। লড়াইটা এখন পেটের সঙ্গে। চাইব আবার সব ঠিক হয়ে যাক। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি পাঠকের হাতে বই পৌঁছে দিতে। কারণ বই ছাড়া বইপোকারা বাঁচে কি করে!’

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page