বঙ্গে ভোট মাহাত্ম্য

ইলেকশন চলছে, তাই এই লেখাটা লিখতে চাইনি আগে। ব্যক্তিগত ভাবে আমি যে কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক হতেই পারি কিন্তু তৃতীয় পক্ষ হিসেবে একটা বার্ড আই ভিউ রাখা আমার ভালোলাগা। কাজেই এই লেখাটা নিয়ে আমার রাজনৈতিক ভাবধারা বিচার করতে যাওয়া খুব একটা ঠিক রেজাল্ট দেবে না। ওহ্, বলে রাখা ভালো, এটা কোনও রাজনৈতিক প্রেডিকশন নয়, তবে এটা একটা প্যাটার্ন বলা যেতে পারে।

এখন আসা যাক কয়েকটা পয়েন্ট নিয়ে আলোচনায়।

১) ওভারঅল সাউথ ইস্ট এশিয়া এখন একটা বিরাট ট্রানজিশনের মধ্যে রয়েছে এই কথাটা আমি বারবার বলেছি। অদূর ভবিষ্যতে এই বিষয়টা খুব ভালো ভাবে সবার নজরেই আসবে বলেই আমার বিশ্বাস। কলোনিয়াল স্ট্রাকচার থেকে সাউথ ইস্ট এশিয়া এত বছরে জেগে উঠছে এটা বলাই চলে। কিন্তু সাম্যাবস্থায় আসতে সময় নেবে। ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’ এই কথাটাই এবার ফলতে চলেছে এই বাংলায়।

২) ২০১১ তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পর আমরা গ্রামে বা শহরাঞ্চলে উন্নতি দেখিনি এটা অস্বীকার করা যাবে না। উন্নতি সবসময়ই থাকবে আবার একটা সরকার স্বৈরাচারীও হবে এটাই নিয়ম, যতক্ষণ না সাম্যাবস্থা তৈরি হয়। এই যে ভোটটা চলছে, এখানে একটা বড় সুইং আমি এক্সপেক্ট করছি বিজেপির পক্ষে। মানে গুজরাত দিয়ে শুরু হয়ে পশ্চিমবঙ্গে শেষ। তিন বছরের ডাবল ইঞ্জিন সরকার সত্যিই দেখতে চলেছি আমরা। উন্নয়ন হবে? কাজ হবে? আমি বলবো হবে। কীভাবে হবে? ৫৮০০০ কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর, দশ বছর এই সরকারের কাজের ক্ষেত্রে অপেক্ষার পর যদি ১০০ টাও কলকারখানা হয়, তাহলে উন্নয়ন। এবার নেগেটিভ দিক থেকেও কিছু সমস্যা রয়েছে, যেটা প্রথম দিকে না দেখা গেলেও পরের দিকে দেখা যাবে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও কিন্তু কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রায় দেড় বছর ডাবল ইঞ্জিন চালিয়েছেন। তখন কিন্তু বেশ কিছু শিল্পপতি এখানে বিনিয়োগ করেছিলেন। এবার আমার হিসাবে তিন বছর সময়।

৩) সংযুক্ত মোর্চার যে ছেলে মেয়েগুলো এগিয়ে এসেছে, এদের হাতে আসবে সাম্য। কিন্তু সেই দল গোটা রাজ্যে তৈরি হয়নি এখনও। আমি মনে করি, বছর কয়েক আরও সময় নেবে সেটা। আমি কোনও রাজনৈতিক বিশ্লেষক নই, তবুও বলতে পারি এটা বাংলার উত্থানের সময়। Yin আর Yang এর ব্যালেন্স শিট মেলানোর সময়। এই সময়টা পশ্চিমবঙ্গ শুধু নয়, বাংলাদেশের সঙ্গেও সম্পর্ক আরও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা। বিশেষত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সম্পর্ক উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা।

ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয় বিজেপি ২০০ আসন না পেলেও ১৪৪-১৫৪ ‘র মধ্যে থাকবে। তৃণমূলও ১২০-৩০ এর আশেপাশে থাকবে। এবং এটা মাথায় রাখতে হবে সিপিএম এবং কংগ্রেস দুই’এরই বটম আউট হয়ে গেছে। এরা আই এস এফ এর সাথে কিছু সিট গেইন করবে। মনে রাখতে হবে, নিউটন তো বলেই গেছেন, প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান এবং বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে। আর ছোটবেলায় আমরা স্থিতি জাড্য / গতি জাড্যও পড়েছি। জানিনা এখনও তা পড়ানো হয় কিনা।

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page