বনশালির ‘দেবদাস’-এর ১৯ বছর!
তৃতীয়পক্ষ ওয়েব- সালটা ২০০২। ১২ জুলাই মুক্তি পেল সঞ্জয় লীলা বনশালীর জনপ্রিয় মুভি ‘দেবদাস’। ছবি মুক্তি পাওয়ার ১৯ বছর হয়ে গেল। গতকাল ছিল সেই দিন। শাহরুখ খান থেকে শুরু করে মাধুরী দীক্ষিত সেইসব মুহুর্তের ছবি শেয়ার করেছেন। স্মৃতিচারণ করেছেন সেইসব দিনগুলি নিয়ে।
১৯৯৯ এবং ২০০২ সালে হাম দিল দে চুকে সনম এবং দেবদাস মুক্তি পাওয়ার পর বনশালীর ছবি তৈরির শৈলী ও দৃশ্যগত স্থান বদলে গেল। দর্শকের মনে এক অন্য জায়গাই তৈরি করে ফেললেন তিনি। গ্র্যান্ড সেট, বাজেৎ, মেকআপ, কস্টিউম, ছবিতে রঙের ব্যবহার, যা বনশালীকে দিয়েছে এক অন্য পরিচয়।
যে সময় দেবদাস মুক্তি পায়, সেই সময় সব থেকে বেশি বাজেটের হিন্দি ছবির মধ্যে একটি ছিল ‘দেবদাস’। প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল এই ছবি তৈরির জন্য। ছবির প্রযোজক গ্রেফতারও হয়েছিলেন এই ছবির জন্য। অভিযোগ ছিল আন্ডারওয়র্ল্ড-এর টাকায় এই ছবি বানানো হয়েছে।
সঞ্জয় লীলা বনশালীর এই ছবির সেট তৈরিতে খরচ হয়েছিল ২০ কোটি টাকা। আর চন্দ্রমুখীর সেট তৈরিতে খরচ হয়েছিল ১২ কোটি টাকা।
পার্বতী অর্থাৎ দেবদাসের পারোর বাড়িতে যে একাধিক রঙিন কাচ লাগানো ছিল। সেই সময় প্রায়ই বৃষ্টি আসত। তাই সেই কাচ বার বার রং করতে হত। আর সেই কাচের জন্য খরচ হয়েছিল প্রায় ৩ কোটি টাকা।
ফিল্মের সেটে ক্রিউতে লাইট মেম্বার ছিলেন ৭০০ জন, ব্যবহার করা হয়েছিল ৪২টি জেনারেটর। যা ছিল সেই সময়ের রেকর্ড। এই ছবির সিনেমাটোগ্রাফার বিনোদ প্রধান ২৫০০টি আলো ব্যবহার করেছিলেন।
আবু জানি-সন্দীপ খোসলার ডিজাইন করা মাধুরীর পোশাক নিয়ে যথেষ্ট চর্চাও হয়েছিল সেই সময়। তার প্রতিটির দাম ছিল প্রায় ১৫ লাখ। ‘কাহে ছেড় ছেড় মোহে’ গানের দৃশ্যে মাধুরীর জন্য যে ঘাগড়া ডিজাইন করা হয়, তার ওজন ছিল প্রায় ৩০ কেজি। সেই ঘাগড়া পরেই তাঁর নাচ করার কথা ছিল, তাই যথেষ্ঠ কঠিন ছিল বিষয়টি। পরে সেই ঘাগড়ার পরিবর্তে তুলনামূলক হালকা ঘাগড়া ডিজাইন করা হয়। তার ওজন ছিল ১৬ কেজি। আর অন্যান্য পোশাকগুলোর ওজন ছিল প্রায় ১০কেজি।
ডিজাইনার নীতা লুল্লা ও পরিচালক বনশালি মিলে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে পার্বতীর লুকের জন্য প্রায় ৬০০টি শাড়ি কিনেছিলেন। প্রতিটা নতুন নতুন লুক তৈরি করার জন্য আলাদা আলাদা শাড়ি পরানো হয়েছিল ঐশ্বর্যকে। সেই শাড়ি পড়াতে প্রতিদিন প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় লাগত।
সাধারণ শাড়ির দৈর্ঘ্য হয় ৬ মিটারের, কিন্তু পার্বতীর শাড়িগুলি ৮ থেকে ৯ মিটারের নেওয়া হয়েছিল। আমরা কেউ ভুলে যাইনি পার্বতীর ছুটে যাওয়ার দৃশ্যের কথা! যা ছবিটিকে এনে দিয়েছিল এক অন্য মাত্রা।