বেঁচে থাকতে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত থাকতেন, মৃত্যুর পর হলেন গাজী
মারপিট, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ছিল তাঁর নিত্যদিনের ব্যাপার। রোজ কারোর না কারোর সঙ্গে তাঁর লড়াই বাঁধত। আর তারই মৃত্যুর পর দস্যু থেকে হয়ে গেলেন গাজী। এরপরই তাঁর নামে নাম রাখা হলো কলকাতার সোনাগাজীর মসজিদ। গাজীর স্মৃতিতে তাঁর মা তৈরি করলেন মসজিদ।
সেই থেকেই এই অঞ্চলের নাম সোনাগাজী। পরে লোকমুখে বিকৃত হতে হতে সোনাগাছি হয়ে দাঁড়ায়। যা কলকাতার সবচেয়ে বড়ো নিষিদ্ধ পল্লি হয়ে ওঠে।
ঠিক কবে তৈরি হয়েছিল এই মসজিদ? সোনাগাজীই বা কি করে হলেন, তার কথা নেই কোথাও। শুধু শোনা যায়, কলকাতা এবং দুই বাংলার পরগণায় বহু মুসলিমের বসবাস ছিল। সেখানেই কোথাও সোনাগাজীর বাড়ি ছিল। যার আসল নাম সোনাউল্লা শাহ চস্তি। বেঁচে থাকতে ছিলেন বর্বর দস্যু। কিন্তু মারা যাওয়ার পর মায়ের স্বপ্নে এসে বললেন, মৃত্যুর পর তিনি গাজী হয়ে গেছেন। এখন থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচাবেন তিনি। অনেকের উপর আবার রেগেও যেতেন। মাকে বলতেন সিন্নি ফেলে দিতে। এরপরেই তাঁর মা সোনাগাজীর নামে মসজিদ তৈরি করলেন। যা চিৎপুর এলাকাকে পরিচিত করল। তবে সেই মসজিদ আর নেই। মসজিদের নামেই রাস্তার নাম হয়েছে মসজিদবাড়ি স্ট্রিট।
তবে সোনাগাজীর মা মারা যাওয়ার পর সব অলৌকিক কাণ্ডকারখানা থেমে যায়। এরপর সোনাগাজীর নাম থেকে যায়। যা বিকৃত হয়ে এখন সোনাগাছি নামে পরিণত হয়েছে।
প্রাচীন কলকাতার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা এরকমই সব ইতিহাস ও জনশ্রুতি আমরা আর কতটুকুই বা মর্যাদা দিয়ে থাকি। কিন্তু অনেকে এইসব কিংবদন্তীকে বিশ্বাস করতেই চান না! এইসব ঘটনাকে গল্প কাহিনী বলেই উড়িয়ে দেন।