যে ছবি কথা বলে জীবনের
অঙ্কনঃ প্রণবশ্রী হাজরা, লেখায় বৈশাখী নার্গিস
দেওয়াল ঘেঁষে রাখা চেয়ারে অনেকদিন কেউ বসে না। ওখানে একটা মন রাখা ছিল, রাখা ছিল রূপকথার গল্প। আধো হাতে ছুঁয়ে ছিল মাটি, আর চোখে অনেক বড়ো পৃথিবীর প্রতি অবাক চাহনি। চুইয়ে পড়া সময়ে আমাদের কেউ ছিল না তখন, সময় গড়িয়ে গেছে। আর আমরা ভুলে গেছি একটা চেয়ার রাখা ছিল পাশের ঘরের মধ্যবর্তী সময় জুড়ে।
কথাগুলো শহরজুড়ে ছড়িয়ে ছিল। এই গলি, ওই গলি, নদী ঘাট। ছায়া মিশে যেত মাঝে মাঝে। দুই শালিকের খুনসুটিতে লেগে থাকত গল্প। নদীর বয়ে চলায় একটা গোটা শহরের টুপটাপ ঝরে পড়া। আমরা গেয়ে উঠতাম, আয় তবে সহচরী, হাতে হাতে ধরি ধরি নাচিবি ঘিরি ঘিরি, গাহিবি গান।
অপেক্ষা ছিল বিকেলের। ধূসর রঙের ভেতর তোমার লাল রঙ ছুঁয়ে দেওয়ার। আমি নীল রঙে মিশে গিয়ে দেখেছি… সেখানে তুমি মায়া হয়ে আছো। আকাশের গায়ে লেখা ছিল আজ নীল রঙে মিশে গেছে লাল। তুমি দূরবর্তী মোহনায় একের পর এক জোনাকি জীবন সাজিয়ে রেখেছ আমাদের জন্য।
আলো ফুটে উঠেছিল সেদিন সারা ঘরময়। আমরা কড়িবড়্গা জুড়ে খেলছিলাম কাটাকুটি। বাইরে তখন বসন্ত। জানি তোমার বোগেনভেলিয়া ভিষণ পছন্দ। এরপর স্বপ্নের মতো সাজিয়ে রেখেছি দুজনে সবুজ আলোর একটা ঘর। ফুলদানিতে প্রিয় ফুলের সুবাশ।
উচ্চিংড়ে স্বপ্নের মতো উড়ছিলে। নদী, সমুদ্র, পাইনের জঙ্গল। প্রজাপতির ডানায় তুমি ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছিলে একের পর এক চেনা মুহুর্ত। এইসবই দেজাভু হতে থাকে বারবার। তুমি ডাক দিয়ে যাও। তুমি চেনা সুরে গেয়ে ওঠো গান। আমরা আবার ফুলের উপত্যকায় খুঁজে নেবো দুজনকেই। চেনা পথ চেনা হবে আবার।