বর্ষা মঙ্গল
পিনাকী চৌধুরী।। নিম্নচাপের হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা ঋতু এসে গেল। বিগত কয়েক বছরেই দেখা গেছে যে, বর্ষার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত তেমন একটা হচ্ছে না, যা হচ্ছে সেটা ওই নিম্নচাপের প্রভাবে। মানে নিম্নচাপই দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ুকে যেন ত্বরান্বিত করে । আজ এই ২০২১ সালে দাঁড়িয়েও অবলীলায় বলা যায় যে, জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, তার পাশাপাশি সমুদ্রের জলস্তরের উষ্ণতা বেড়েছে। ফলস্বরূপ ইদানিং ঘন ঘন নিম্নচাপ এবং মাঝেমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। যদিও মৌসম ভবনের আগাম পূর্বাভাস অনুযায়ী এইবছর স্বাভাবিক বৃষ্টি হবে সারা দেশেই। তাই হয়তো আশায় বুক বেঁধেছেন দেশের কৃষক সমাজ। সাধারণত জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষায় যে বৃষ্টিপাত হয়, তাতেই চাষ আবাদ করা হয়। আর কৃষিকাজ যতই ভাল হবে, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়বে। তবে বর্ষাকাল মানেই যেন আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা, কখনও ঝেঁপে তো আবার কখনও মেপে বৃষ্টি !
অষ্টাদশী কোনো সুন্দরীর মতো ও পল্লীপ্রকৃতিও যেন এক নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে ওঠে ! দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের পাশেই যেন সবুজের সমারোহ আমাদের মনকে পুলকিত করে । খাল বিল জলে টইটম্বুর ! শহরের আনাচে কানাচে দামাল ছেলেরা বর্ষায় জলকাদা মেখে দাপিয়ে ফুটবল খেলে ! তবে বর্ষার বৃষ্টিতে সিক্ত মাটির সোঁদা গন্ধ শুকতে কার না ভাল লাগে ! বর্ষার সঙ্গে কবি মনের সম্পর্কটা আজও সম্পৃক্ত ! কবির কল্পনায় তখন আকাশের ঘন কালো মেঘে শুধুই যেন বিরহ ! একরত্তি কোনো শিশু হয়তোবা বাড়ির সামনে রাস্তায় বর্ষার জমা জলে কাগজের নৌকা ভাসিয়ে দিয়ে এক অনাস্বাদিত আনন্দ অনুভব করতে ব্যস্ত । আর বর্ষার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কটা আজও নিবিড় ! আজও হয়তো সেই উঠতি যুবক তার প্রেয়সীকে কাছে পেতে মরীয়া ! আজও হয়তো তার প্রেমের অনুভূতি টা কাব্য হয়ে ঝরে পড়ে প্রেমপত্রে ! বাস্তবে বর্ষাকাল মানেই যেন এক নস্টালজিয়া !