রতন টাটার ব্যর্থ প্রেম
পিনাকী চৌধুরী।। দেশের অন্যতম প্রধান ও সফল শিল্পপতি হিসেবে আজও রতন টাটার নাম অগ্রগণ্য । কিন্তু তিনি অবিবাহিত ? তবে এই ২০২১ সালে ৮৩ বছর বয়সেও রতন টাটা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৩৭ সালে গুজরাটের সুরাতে রতন টাটা জন্মগ্রহণ করেন। আর পাঁচটা শিশুর মতোই তাঁর বেড়ে ওঠা ! তাঁর পিতা চাইতেন রতন টাটা আর্কিটেকচার নিয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করুক। ক্রমে ক্রমে রতন টাটা যৌবনে পা দিলেন এবং সেই যৌবনকালে অত্যন্ত সুদর্শন পুরুষ হিসেবে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন রতন টাটা। কিন্তু তার আগেই ঘটে যায় ভাগ্য বিপর্যয় ! রতন টাটার বয়স যখন মাত্র দশ বছর, তখনই তাঁর পিতা মাতার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে ! বস্তুতঃ তার পর থেকেই তিনি তাঁর ঠাকুমার কাছে মানুষ হয়েছেন। ঠাকুমার ইচ্ছাতেই এবং অবশ্যই প্রচেষ্টায় রতন টাটা আর্কিটেকচার নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার পরে লস এঞ্জেলেসে পাড়ি দিলেন। কিন্তু অর্থ, যশ, প্রতিপত্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি চিরকুমার রইলেন কেন ?
কিছুদিন আগে এক ফেসবুক সাক্ষাৎকারে রতন টাটা নিজেই সেই রহস্যের আবরণ উন্মোচন করেন ! লস এঞ্জেলেসে থাকাকালীন সময়ে তিনি এক মার্কিন সুন্দরীর প্রেমে পড়েছিলেন। ক্রমে ক্রমে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে এবং দু’পক্ষই বিয়ের আলাপ আলোচনা শুরু করেন । কিন্তু অকস্মাৎ তাঁর ঠাকুমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন । নিরুপায় হয়ে রতন টাটা দেশে ফিরে আসেন ।
বস্তুতঃ তখনও রতন টাটার পরিবার এবং সেই মার্কিন সুন্দরীর পরিবার বিয়ের কথাবার্তা পাকা করেন। ঠিক হয় সেই সুন্দরী ভারতে এসে রতন টাটার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবেন। সেই মোতাবেক বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি ! ১৯৬২ সালে ভারত চিন যুদ্ধ শুরু হলে সেই মার্কিন সুন্দরীর পরিবার তাদের মেয়েকে আর ভারতে পাঠাতে রাজি হলেন না। হ্যাঁ, প্রথম যৌবনের সেই প্রেম কিন্তু আজও ভুলতে পারেননি রতন টাটা ! আর প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তাই তিনি রয়ে গিয়েছেন চিরকুমার ! তবে কর্মক্ষেত্রে রতন টাটা উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছেছিলেন ! লাভ করেছেন পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণের মত দুর্লভ সম্মান !
১৯৯১ সালে তিনি টাটা গ্রুপের পঞ্চম চেয়ারম্যান পদে আসীন হয়েছিলেন। আর টাটা গ্রুপের ন্যানো গাড়ির নাম তো সবার মুখে মুখে ফেরে ! প্রেমে ব্যর্থ হয়েও একজন সফল উদ্যোগপতি হিসেবে রতন টাটা যেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন । কাজের প্রতি নিবেদিত প্রাণ হয়ে রতন টাটা আকাশকে ছুঁয়েছেন ।