আরও ৬ মাস বাড়ল খালেদা জিয়ার সাজা মুক্তির সময়
তৃতীয়পক্ষ আন্তর্জাতিক– বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করার মেয়াদ বাড়ানো হলো আরও ছয় মাস। গতকালই এক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
তবে চতুর্থবার খালেদা জিয়ার সাজা মুকুবের মেয়াদ বাড়ানো হল। কিন্তু আগের মতো সব শর্তই মেনে চলতে হবে বাংলাদেশের বিরোধী নেত্রীকে। যারমধ্যে অন্যতম হল,১) দেশের বাইরে পা রাখতে পারবেন না খালেদা জিয়া। ২) দেশে থেকেই তাঁকে যাবতীয় চিকিৎসা করাতে হবে। এদিন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, “খালেদা জিয়া দেশের মধ্যে যেখানেই চাইবেন চিকিৎসা করাতে পারেন। তবে দেশের বাইরে নয়।”
প্রসঙ্গত এর আগে অনেকবার খালেদা জিয়ার পরিবার তাঁর স্থায়ী মুক্তির দাবিতে সরব হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে গতকাল এই বিষয়েও কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি সাফ সাফ জানিয়েছেন, স্থায়ী মুক্তি চাইলে, তার জন্য আদালতে আবেদন করতে হবে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সেইসময় তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি সংশোধনাগারে পাঠানো হয় খালেদা জিয়াকে।এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গেও তাঁর নাম জড়ায় এবং আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন।
এরপর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা হয় কিছুদিনের জন্য। শর্তসহ সংশোধনাগারের চার দেওয়ালের থেকে মুক্তি পান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। সেটিই ছিল প্রথমবার। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয়বার এবং ২০২১ সালের মার্চে তৃতীয়বার সাজা স্থগিত করা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার তৃতীয় দফার সাজার স্থগিতাদেশ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন সেটি আরও ৬ মাসের জন্য বাড়ানো হয়।
এই বছরের এপ্রিলে খালেদা জিয়ার শরীরে কোভিড সংক্রমণ দেখা দেয়। প্রথমে তাঁকে বাড়িতে হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা করা হলেও পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। সেই সময় তাঁকে ঢাকার এক বেসরকারি হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় দু’মাস হাসপাতালে ভরতি ছিলেন খালেদা জিয়া। আইসিইউতে রাখা হয়েছিল তাঁকে।
খালেদা জিয়ার পরিবারের তরফ থেকে, তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই আর্জি নাকচ করে দেয় শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশ আইন মন্ত্রক সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে না। তিনি দেশের যে কোনও জায়গায় চিকিৎসা করাতে পারেন।
রাজনৈতিক ডামাডোল শুরু হয় এরপর। বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্যই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না আওয়ামি লিগ সরকার। তবে কি কারণে অনুমতি দিচ্ছে না, সেই বিষয়টি ধোঁয়াশার মধ্যেই রেখেছেন বাংলাদেশ সরকার।
#Bangladesh_news