বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধারণা, কারোর প্ররোচনায় পূজামণ্ডপে কোরআন রেখেছে ইকবাল

তৃতীয়পক্ষ ওয়েব- কয়েকদিনের থমথমে পরিবেশ এবং গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়েছে কারওর প্ররোচনায়। ইকবাল হোসেন নামের এক ব্যক্তির সিসিটিভি ভিডিও ঘিরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। ব্যক্তিটি কারও প্ররোচনায় কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রেখেছিলেন বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

আজ সচিবালয়ে জাতীয় কমিটির সভার পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান ইকবাল হোসেনকে শনাক্ত করার বিবরণে বলেন, কুমিল্লার ঘটনাটি যে লোকটি করেছেন, তাঁকে ক্যামেরার মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি মাজারের সঙ্গের মসজিদে রাত ৩টের দিকে গিয়েছিলেন। তবে একবার, দু’বার নয় তিনবার গিয়েছেন।

সেখানে ওই মসজিদে দুজন খাদেম ছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও ইকবাল কথা বলেছেন। এরপর মন্ত্রী বলেন ‘আমাদের অভিজ্ঞ টিম বিশ্লেষণ করে সুনিশ্চিত হয়েছে যে এই ব্যক্তিটি মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন শরিফ এনে রেখেছেন, এটি তাঁরই কর্ম। কোরআন শরিফ সেখানে রেখে তিনি প্রতিমার গদাটি কাঁধে করে নিয়ে এসেছেন।’

আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন যে, এই কাজটিকে ভীষণ পরিকল্পনা মতো করা হয়েছে। দুই থেকে তিনবার যাওয়া–আসার মধ্যে তিনি এই কাজটি শেষ করেছেন। কারওর প্ররোচনা ছাড়া এটি করেছেন বলে তাঁরা এখনো মনে করেন না। সেই ব্যক্তি ধরা পারলে বাকি সব উদ্ধার হবে বলে মন্ত্রী বিশ্বাস করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা মহানগরীর নানুয়া দিঘিরপাড় পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা নিয়ে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বিভিন্ন থানায় আটটি মামলায় ৭৯১ জনকে আসামি করা হয়। কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখেছিলেন যে ব্যক্তি তাকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই তাকে শনাক্ত করা হয়েছে।

এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, রাত ২টা ১০ মিনিটে দারোগাবাড়ির মসজিদ থেকে কিছু একটা হাতে নিয়ে বের হচ্ছেন এক যুবক। তার গতিবিধি সন্দেহজনক। এর এক ঘণ্টা ২ মিনিট পর আরেকটা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কুমিল্লার নানুয়াদীঘি অস্থায়ী মণ্ডপের উত্তর-পূর্বদিকের রাস্তায় ঘোরাফেরা করছেন ওই ব্যক্তি। তার কাঁধে ছিল হনুমানের হাতে থাকা গদা।

অন্যদিকে, ইকবালের মা আমেনা বেগম সংবাদমাধ্যমে জানান, ইকবাল ১৫ বছর বয়স থেকেই নেশা করা শুরু করে। ইকবাল নেশাগ্রস্ত হয়ে নানাভাবে পরিবারের সদস্যদের ওপর অত্যাচার করতো। বিভিন্ন সময় রাস্তাঘাটে হাঁটে। ইয়াবা সেবন করে। সে মাজারে মাজারে থাকতে ভালোবাসতো। ইকবালের মা আমেনা বেগম বলেন, তারপর থেকে অপ্রকৃতস্থ ইকবাল। তার চলাফেরার কারণে বিভিন্ন সময় চুরির অপবাদে তাকে স্থানীয়রা মারধর করতো বলে আক্ষেপ করতো। ভালো ক্রিকেটও খেলতে পারতো ইকবাল।

মা আমেনা বেগম আরো জানান, তিনি কাউন্সিলরের মাধ্যমে জানতে পারেন ইকবাল পূজামণ্ডপ থেকে হনুমানের গদা নিয়ে আসেন। তার ছেলে যে অন্যায় করেছে, যদি সেটি সত্য হয় তাহলে যেন তার শাস্তি হয়।

 

Curtasy-Bangladesh news, Prothom Alo

 

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page