কবীরকথা

কবীরকথা।। শুভদীপ সাহা

রাষ্ট্র মানেই…. (১)

( Measures against power )

আমাদের কবীর একটু খ্যাপাটে গোছের এটা তো আগেই বলেছিলাম। এই বছরখানেক আগে একদিন হঠাৎ করেই এক ফাঁকা বেদী মতো জায়গায় দু’চারজন লোক জমিয়ে কথা বলতে শুরু করল। বোধহয় ভেবেছিল, এটাই লন্ডনের হাইড পার্ক। কথার তোড়ে দুই থেকে দশ-বিশ পঞ্চাশ মতো লোকও জমে গেল ! আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, বুঝলেন তো। একটু যে ভয় করছিল না তা নয়, কারণ কবীরের এইসব বলা অস্বস্তিকর বই কী! রাষ্ট্রবিরোধী নানা কথা, সত্যি সত্যি কথা সহজভাবে বলে দিচ্ছে। কি অন্যায় ভাবুন ! লোকজনও কীভাবে যেন সব বুঝতে পারছে। কবীরের কথায় তারা বুঝতে পারছে, এতদিন ধরে কীভাবে তাদের বোকা বানিয়ে এসেছে নেতারা। তারাও কবীরের কথায় উত্তেজিত, সরগরম। কবীরও উত্তেজিত। বলে চলেছে। বলেই চলেছে। হঠাৎ কবীর দেখল, সামনের সারি বেবাক ফাঁকা। চম্পট। পরের সারিগুলিও ফাঁকা হতে শুরু করেছে। পিছন ফিরে তাকিয়ে দ্যাখে কি, তাঁর পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে হুমদোপানা এক নেতা, মানে রাষ্ট্রকর্তা।

–      কী রে ব্যাটা? কী বলছিলি আমার নামে?

–      আমি? কই কিছু না তো ! , কবীরের তৎক্ষণাৎ উত্তর।

–      আমার নামে খারাপ খারাপ কথা বলছিলি না?

–      দ্যুৎ ! তা হয় কখনও? বলতে পারি?

–      তাহলে এখন আমি যা যা বলব, তুই আমার কথায় সায় দিবি?

–      নিশ্চয়ই। আপনি বলে তো দেখুন।

সভা ফাঁকা। কবীর এসে দাঁড়ালো আমার পাশে; একসাথে চা – সিগারেট খাচ্ছি। এমনসময় একজন লোক এসে এদিক-ওদিক চেয়ে কবীরকে ধরলো।

–      খুব যে বড়ো বড়ো বক্তিমে কচ্ছিলে, নেতা আসতেই সব ফুস?

–      হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। ফুস হবে না?

–      মানে? যা বলছিলে সব মিথ্যে কথা?

–      কেন? কথাগুলো মিথ্যে মনে হ’ল তোমার?

–      তা নয়… তাহলে, সামনাসামনি বললে না কেন?

–      ভয়ে।

–      ভয়ে?

–      হ্যাঁ।

–      ছি ছি ছি ! কবি ঠিকই বলেছিল, তুমিও মানুষ আমিও মানুষ, তফাৎ কেবল শিরদাঁড়ায়। একটা হাঙরেরও শিরদাঁড়া আছে আর তোমার নেই?

–      আছে, আমারও শিরদাঁড়া আছে। কিন্তু এইসব হাবিজাবি কাজ করে নষ্ট করার মতো, ভেঙে ফেলার মতো কোনো শিরদাঁড়া আমার নেই।

প্রথম পর্ব পড়তে ক্লিক করুন এই লিংক-এ- শুরুর কথা  

দ্বিতীয় পর্ব পড়তে ক্লিক করুন এই লিংক-এ-  হাতে রইল পেনসিল 

 চলবে…

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page