আমি এই ঘাসবনে বসে লিখি
শানু চৌধুরী
★
তোমাদের মুখ ঘেঁষে মুছে গেছে মেঘ
শয়তানের চোখ থেকে নামানো মুদ্রায়
কত যে সুতোর জট শঙ্খ ছুঁয়ে আছে
ভ্রমে ভ্রমে খুব তাকে শাঁখামুঠি লাগে
গ্রীবা তার নড়ে ওঠে জানালার কাছে
মাতমের ছাই নিয়ে বসে আছে যারা
মানুষ ধরেছে ভেক তাতারের বেশে
লুঠেছে নাগার মতো শিশুদের বীজ
তুমি তো চাণক্য তাই এড়িয়ে চলেছ
ভিড়ের শোভাতে থেকে হয়েছ বোধির
মায়াময় দেব ভেবে টোকানো কণায়
মারীচের ভুল দিয়ে গড়ালে প্রবীর
★
কুশপুত্তল নিয়ে খেলা হল বড়
ফুরিয়ে এলে অশৌচান্ত
শেষের বেলা…
নগরের বাঁকে বাঁকে দেখা হলে জানি
কালিকামঙ্গলের আদলে ফুটেছে
পদ্মের প্রক্ষিপ্ত অনাবিল রূপ
তুমি কি দেখেছ, পীঠস্থানের হাওয়া
তুমি কি দেখেছ, বাণিজ্যের বাসনায়
নুইয়ে পড়া গাবগাছে চাপা,
অলৌকিক কাহিনির রামপ্রসাদীয় বেড়া!
এইতো আমার চক্র, আমার সুষুম্না!
মূর্ছা গেছে আজ,রামপ্রসাদের রূপকে
আর কবীরের ‘দানা বীনা’-য়
তুমি ভুলে যাও, নৈবেদ্যর রেকাবি
মূর্তির আঁচলে ঝরে যাবে জানি,
গীতিকা-র নিরাকারা!
অবিদ্যা ছড়িয়েছে খুব
দেহভাণ্ডে লেগেছে রিরংসা
তবু চিনির কাছে গলে আছে
পিঁপড়ের তমোগুণ কুয়াশা
★
কখনো কখনো একা হতে ভাল লেগে যায়
কখনো কখনো কেউ আবার একা হতে
চায় না
রাস্তায় চলতে গিয়ে দেখি বেলন খসে পড়ে গেছে- মায়ের হাতের
দক্ষিণ থেকে আসা প্রবল ঠাণ্ডা চালাক করে দিল,আমায়
উত্তর থেকে আসা প্রচুর ধুলো বিশ্বাসঘাতক করে দিল আমায়
সবকিছুই আছে আমার সবকিছুই ছিল
ছোটবেলার খিদে আজ হয়ে গেছে
খাদ্য সংযম
তবু খিদে পায় রুটির তাল দেখে
আর গোল হয়ে যায় আমাদের খিদে
যেমন রমজান
★
তাকিয়ে দেখার পর খুব তাক লেগেছিল
দু’চারটে জৌনপুরি পরীর বেগে খসেছিল কি?
ধ্রুপদের গায়ে যেই সুর ঢুকেছিল,
তখনই অনুবাদে টোকা লেগে
সংগীত হল গবেষণার মান-কৌতূহল
আমি কি সেই দীপক শুনেছি…
যাঁর প্রদীপ জ্বলেছিল তানসেন থেকে
আবুল ফজল থেকে তুলে আনবো দেখো, ছত্রিশের সংগীত
কত শিরিন কলম ভেসে গেছে
আঙুরের খেতে, চীহড়ের বনে, মায়ার কুণ্ডী জেনে
অথচ শাখায় শাখায় বসওয়ানের কারুকাজ
বসে আছে ভেবে, কাংড়া চিত্র থেকে তুলেছি ভার!
এ জগত বড় বিস্ময়!
বিস্ময়, নাদির আল-অসরের মতো
যা উধাও হয়ে গেলে মনে পড়ে
হৃদয় মুচড়ে আসা ফারুকের কথা