আপনি কি মাঝে মাঝে চুপ করে থাকেন?
তৃতীয়পক্ষ স্বাস্থ্য সচেতনতা- সেই কোন সকাল থেকে শুরু হয়ে যায় আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ। তার মধ্যে সারাক্ষণ ঘিরে থাকে নানারকম শব্দ। মোবাইলের টুংটাং থেকে ঘড়ির টিকটিক। কখনো জল পড়ার আওয়াজ তো কখনো কাকের কা কা। এত সব আওয়াজের মধ্যে শরীরকে সুস্থ রাখতে ১০-১৫ মিনিট চুপ করে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। আগেকার দিনে অনেকেই মাসে বা দু’মাসে এক-দুই বার মৌন ব্রত পালন করতেন। অর্থাৎ একটা গোটা দিন চুপ করে থাকতেন। কারণ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে শব্দ দানবের হাত থেকে শরীরকে বাঁচাতে নীরবতার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে।
আসলে নিয়মিত কিছু সময় চুপ থাকলে এবং শব্দহীন পরিবেশে সময় কাটালে আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্কের ভিতরে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন হতে শুরু করে, যার প্রভাবে একাধিক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়।
স্ট্রেস থেকে মুক্তি লাভ
আমাদের আশেপাশে যখন শব্দের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, তখন মস্তিষ্কে সিগনাল পৌঁছয়। যার প্রভাবে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অ্যাংজাইটি এবং স্ট্রেসের মাত্রা বাড়তে শুরু করে দেয়। আর দিনের পর দিন এরকম হতে থাকলে শরীরেও নানাবিধ ক্ষতি হতে সময় লাগে না।
কাজেই, নিয়মিত ১০-১৫ মিনিট চুপ থাকলে এবং শব্দহীন পরিবেশে সময় কাটাতে শুরু করলে স্ট্রেস হরমোনের প্রভাব কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রক্তচাপও স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসে। ফলে শরীরের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না। তাই এবার থেকে যখনই কোনও কারণে দুশ্চিন্তা হবে, তখনই শান্ত পরিবেশে কিছুটা সময় কাটানোর চেষ্টা করবেন, দেখবেন উপকার পাবেন।
মস্তিকের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
নিয়মিত ১৫-২০ মিনিট চুপ থাকলে এবং শান্ত পরিবেশে সময় কাটালে ব্রেনের হিপোক্যাম্পাস নামক অংশটির ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যে কারণে স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যদি শান্ত পরিবেশ উপভোগ করতে করতে ৪০ মিনিট একটু হাঁটাহাটি করে, তাহলেও নাকি সমান উপকার পাওয়া যায়। তাই তো বলি, শব্দ যেখানে প্রতিদিন আমাদের একটু একটু করে মেরে ফেলছে, সেখানে মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে নীরবতা পালনের প্রয়োজন যে বেড়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ইনসমনিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
কিছু সময় শান্ত পরিবেশে কাটালে অনিদ্রার সমস্যা দূর হতে সময় লাগে না। প্রতিদিন কয়েক মিনিট শান্ত পরিবেশে এক মনে মেডিটেশন করলে আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্কের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যার ফলে ইনসমনিয়ার মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে মনও স্থির হয়। খারাপ চিন্তা ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। আর এমনটা যখন হয়, তখন জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত আনন্দে ভরে উঠতে সময় লাগে না। তাহলে বুঝেছেন তো চুপ থাকলে কত উপকার পাওয়া যায়! থাকবেন তো চুপ করে…