হারিয়ে গেছে সেই নীল খামের চিঠি
পিনাকী চৌধুরী – আশি বা নব্বই এর দশকে প্রায় প্রতিটি বাঙালি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন নীল খামের সেই চিঠির জন্য অথবা সুন্দর হাতের লেখায় সমৃদ্ধ নিতান্তই একটি পোষ্ট কার্ডের জন্য, যেসব চিঠির প্রতিটি ছত্রে ছত্রে আবেগ, অনুভূতি, কিম্বা অতিশয় স্পর্শচেতনা ভাষা সুন্দর ভাবে উপস্থাপিত হত। শেষ বিকেলের ডাকে যখন ডাক হরকরা চিঠি নিয়ে হাজির হতেন, কি যে আনন্দ হত !
তবে সময় সদা পরিবর্তনশীল! ইন্টারনেটের যুগে আজ অনেকেই চিঠি লিখতে বেমালুম ভুলে গেছেন । পরিবর্তে তাঁরা ই মেইল অথবা হোয়াটস অ্যাপেই বার্তা পাঠাতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন! ইদানিং কলকাতার আনাচে কানাচে আগের মতো আর সেইভাবে বাড়ির সদর দরজায় ঝোলানো ‘লেটার বক্স’ আর তেমন ভাবে চোখে পড়ে না ! এই গতিময় যুগে ইন্টারনেটেই আপনার আমার ভরসা !
পোষ্ট অফিসের সামনে অতীতে যে লাল রঙের ডাক বাক্স স্বমহিমায় উজ্জ্বল ছিল, আজ তারও যেন ভগ্নদশা ! শিল্পাচার্য নন্দলাল বসু অতীতের একসময় শান্তিনিকেতন থেকে যেসব চিঠি লিখে পাঠাতেন , তা যেন সত্যিই তুলনারহিত! সেই চিঠি যেমন ভাষার লালিত্যে উজ্জ্বল ছিল , ঠিক তেমনই শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর চিঠিতে রঙের প্রলেপ থাকতো!
এছাড়াও অতীতের একসময় নববর্ষ উদযাপন অথবা শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রায় প্রতিটি বাঙালি বাড়িতেই চিঠি আসতো ! তবে এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে চিঠি লেখার আবেগ, অনুভূতি আজ যেন সোনালী অতীত ! জীবন হয়তো থমকে যায় নি , কিন্তু থমকে গেছে চিঠি লেখা ।