নদীর তীরে বাস- বছরভর সর্বনাশ ! দায়ী উষ্ণায়ন ?
পিনাকী চৌধুরী- সাধারণত বর্ষার ঠিক প্রাক মুহূর্তে এই মে মাস হল ঘূর্ণিঝড়ের আদর্শ সময় ! গতবছর ২০ মে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল কলকাতা সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল! ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল অত্যাধিক আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই ২০২১ সালের ২৬ মে অপর এক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে কার্যত লন্ডভন্ড হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এবং ওড়িশা উপকূল! যদিও এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হয়েছে ওড়িশায় ! কিন্তু তার প্রভাব পড়েছে আমাদের এই রাজ্যে। আসলে এই ‘ ইয়াস’ নামক ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপ্তি ছিল বিশালাকার। তবে এ যাত্রায় কলকাতা বেঁচে গেল! ঘন্টায় ৬২ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে গেল কলকাতার ওপর দিয়ে , সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত। তবে এইরকম ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়ের নেপথ্যে অনেক বিজ্ঞানী এবং পরিবেশবিদ পরোক্ষভাবে বিশ্ব উষ্ণায়ন কে দায়ী করেন।
নদীর তীরে বাস – বছরভর সর্বনাশ ! ভাবুন তো একবার, সেইসব মানুষদের কথা, যাঁরা কিনা বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবলীলা প্রত্যক্ষ করেছেন এবং ভিটেমাটি হারিয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন ! কয়েক বছর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ‘ ইস্টার্ন গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ তাদের রিপোর্টে জানিয়েছিল বিশ্বের গড় তাপমাত্রা দু’ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেই ঘূর্ণিঝড় ও তাপ প্রবাহের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্রমশই বাড়বে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ইতিমধ্যেই সেই গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। বস্তুতঃ সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে তাপমাত্রা পরিবর্তনের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে।
অতীতেও ঘূর্ণিঝড় সংগঠিত হত, কিন্তু ইদানিং কালের ঘূর্ণিঝড়ের প্রাবল্য তুলনায় অনেক বেশি। তথ্য বলছে , বিগত চার দশকের মধ্যে সাম্প্রতিক তম ঘূর্ণিঝড় ‘ আমফান’ এবং এই ‘ ইয়াস’ এর প্রাবল্য অনেক বেশি এবং ধারে ও ভারে অনেক বিধ্বংসী ! এছাড়াও মানুষ নির্বিচারে সবুজ কে ধ্বংস করে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছে। কখনও ঘূর্ণিঝড় , তো আবার কখনও অতিবৃষ্টি অথবা অনাবৃষ্টি ! এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে বসেছে । হ্যাঁ, প্রকৃতি আজ মানবজাতির প্রতি রুষ্ট হয়েছেন !