অরণ্যষষ্ঠীর নেপথ্যে রয়েছে যে কাহিনি
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ ! আর প্রতিবছরই এই জামাইষষ্ঠী ধূমধাম করে পালন করা হয় আমাদের সমাজে। সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই, মানে বৈদিক যুগ থেকেই জামাইষষ্ঠী পালনের প্রথা চালু রয়েছে। মা ষষ্ঠী মূলত মাতৃত্বের প্রতীক , সন্তানের মঙ্গল কামনায় মা ষষ্ঠীর পুজো করা হয়। দেবী দ্বিভুজা, দুনয়না , দিব্যবসনা , বেড়াল তাঁর বাহন । বাস্তবে এই জামাইষষ্ঠীর দিনে বাংলার প্রতিটি জামাই তাঁর বিবাহিতা স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এবং মিষ্টান্ন নিয়ে তাঁর তাঁর শ্বশুরবাড়ি আসেন । জৈষ্ঠ্য মাসের ষষ্ঠী তিথির প্রথম প্রহরে মা ষষ্ঠীর পুজো করা হয়।
কিন্তু এই প্রথার নেপথ্যে কি কাহিনি লুকিয়ে রয়েছে ? কথিত আছে, একবার এক গৃহবধূ তাঁর শ্বশুরবাড়িতে চুরি করে মাছ খেয়ে নিয়ে দোষ দিয়েছিলেন বিড়ালের ওপর ! আর তারপরেই তাঁর সন্তান নিখোঁজ হয়ে যায় । বিমর্ষ হয়ে পড়লেন সেই গৃহবধূ। তাহলে উপায় ? গৃহবধূ তার অব্যবহিত পরেই অরণ্যে গিয়ে মা ষষ্ঠীর পুজো করলেন তাঁর সন্তানের মঙ্গল কামনায় । আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি তাঁর হারানো সন্তানকে ফিরে পেলেন ! অবাক পৃথিবী ! সেই থেকেই জামাইষষ্ঠীর অপর নাম অরণ্যষষ্ঠী ! কিন্তু চুরি করবার অপবাদে সেই গৃহবধূর শ্বশুর শাশুড়ি তাঁকে তাঁর বাপের বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিলেন না ! এদিকে ব্যাথাতুর মন নিয়ে সেই গৃহবধূর বাবা মা অবশেষে এক উপায় বার করলেন। তাঁরা ষষ্ঠী পুজোর দিনে তাঁদের মেয়ে ও জামাইকে নিমন্ত্রণ জানালেন । আর জামাইষষ্ঠীর দিনে জামাই ও মেয়ে দুজনেরই একসঙ্গে সেই বাড়ির এলেন।
আজ জামাইষষ্ঠী। তাই বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরেই যথাযথ কোভিড বিধি মেনেই ধূমধাম সহকারে জামাইষষ্ঠী পালন হচ্ছে। আর এইদিন যেন জামাইদের রাজকীয় সম্বর্ধনা দেওয়া হয় , সঙ্গে তো রয়েছেই বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন, ফলাহার এবং অবশ্যই মাছ মাংস সহকারে বিভিন্ন লোভনীয় পদ ! ওই যে বলে না ” জামাই আদর ” ।