মন খারাপ! আছে তো জাদু কি ঝাপ্পি

তৃতীয়পক্ষ ওয়েব– সত্যি সত্যি যদি এরকম হতো, জাদু কি ঝাপ্পি দিলেই সব রোগ সেরে যেত, তা হলে কেউ একটুও রাগ করত না, মান-অভিমান মিটিয়ে নিত। সারা বিশ্বজুড়ে সব ঠিক হয়ে যেত।

তবে এতটাও দূরে যেতে হবে না। ব্যক্তিগত জীবনে একটু আধটু জাদু কি ঝাপ্পি  যদি পাওয়া যায়, তবে কিন্তু মন্দ হয় না। প্রিয়জন অর্থাৎ বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-প্রেমিক-বন্ধু,বান্ধবী যে কেউ হতে পারেন, তিনি যদি দিনে কয়েকবার আপনাকে একটু জড়িয়ে ধরে আদর করে দেন, তা হলেই চাপ, মানসিক অবসাদের মতো কঠিন ব্যাপারগুলি আর কাবু করতে পারবে না!

তবে এটা কিন্তু মনগড়া কথা নয়, বিজ্ঞানীরা সেটাই বলছেন। একটু বুঝিয়ে বলতে গেলে, যখন কাউকে জাদু কী ঝাপ্পি দেবেন বা জড়িয়ে ধরবেন, তখন মস্তিষ্কে অক্সিটোসিন নামক এমন একটি হরমোন নিঃসৃত হবে,  যা এক নিমেষে কমিয়ে দিতে পারে মানসিক চাপ, টেনশন এবং অবসাদের মতো সমস্যাগুলি। অক্সিটোসিনের কারণেই প্রিম্যাচিওরড শিশুদের মায়েরা ক্যাঙ্গারু ট্রিটমেন্ট দিয়ে থাকেন। ক্যাঙ্গারু কেয়ার আর কিছুই নয়, মায়ের সঙ্গে শিশুর সরাসরি স্কিন কন্ট্যাক্ট আর তার ফলে শিশুর শরীরে অক্সিটোসিন বেড়ে যাওয়ায় তার শরীরের বাড়বাড়ন্তও তাড়াতাড়ি হয়।

তাহলে, একটি ছোট্ট শিশুর শরীরে যদি এই কাডল হরমোন এত প্রভাব ফেলতে পারে, তা হলে আমাদের, অর্থাৎ পূর্ণবয়স্কদের শরীরে কতটা সুদূরপ্রসারী হতে পারে তার প্রভাব। দেখে নিই, কীভাবে জাদু কী ঝপ্পির মাধ্যমে নিঃসৃত এই কাডল হরমোন অক্সিটোসিন আমাদের মানসিক অবসাদ ও চাপ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে-

  1. মন ভাল করে দেয়। এই ধরনের হরমোনের নিঃসরণ পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে এন্ডোরফিন নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হতে সাহায্য করে। এই হরমোনই আমাদের মনকে খুশি-খুশি রাখে। এই এন্ডোরফিন আবারডোপামিন-এর নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। ডোপামিনই আমাদের ছোট-ছোট কাজ নিয়ে খুশি থাকতে সাহায্য করে।যার ফলে যদি ছোট একটা জাদু কি ঝাপ্পি আমাদের খুশি করে দিতে এতটা সাহায্য করতে পারে, তা হলে সেটি পেতে মন্দ কী!
  2. মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে অক্সিটোসিন। প্রদাহের মাত্রা কমলে শরীর এমনিতেই জুড়িয়ে যাবে। আর যত শরীর ঠান্ডা হবে, তত মাথাও ঠান্ডা হবে। আর মাথা ঠান্ডা থাকলে স্ট্রেস বা অবসাদ আর আপনার জীবনে থাবা বসাতে পারবে না। তা হলে জাদু কী ঝপ্পি কাজে লাগল কিনা!
  3. আপনার একা লাগছে? জড়িয়ে ধরুন প্রিয়জনকে। বিজ্ঞানীদের মতে, অ্যালঝাইমার্স বা স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার মতো কঠিন রোগের প্রাথমিক কারণই হল একাকীত্ব? আর এই একাকীত্বহয় অক্সিটোসিনের অনিয়মিত ক্ষরণে! তাহলে ভেবে দেখুন, এই একাকীত্বই কিন্তু আবার মানসিক অবসাদের ফাঁদে পড়ার প্রথম ধাপও বটে। তাই আজকাল, একাকীত্ব দূর করতে ডাক্তাররা পরামর্শ দেন নিয়মিত জাদু কি ঝপ্পি দেওয়ার!
  4. মুড সুইং অর্থাৎ মুড ফ্লাকচুয়েশনের ওঠানামা নির্ভর করে সেরোটোনিন নামে অন্য একটি হরমোনের ওঠানামার উপর। আর কাডল হরমোন এই সেরোটোনিনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে।তাই কেউ আমাদের জড়িয়ে ধরে একটু আদর করে দিলে আমাদের মুড ভাল হয়ে যায়। অনেকক্ষণ ধরে ঝগড়ার পর মিষ্টি হেসে পার্টনার যদি একটু  জড়িয়ে ধরে, তা হলে কার না ভালো লাগে। আর এসবই হচ্ছে কাডল হরমোনের ম্যাজিক।

 

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page