গুচ্ছ কবিতা।। অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়
রাস্তা
কিছুদূর একা হেঁটে মনে হয় পাশে কেউ থাক
যতটুকু পারা যায় তাকেই সজীব করে রাখি
এমন নীরব দিনে কেউ এসে পালক ছড়াক
জীবনের কাছাকাছি ফিরে যাক শরাহত পাখি
গাছে গাছে ফুল আসে পাতাটির আড়ালে আড়ালে
আদরের ছায়াটুকু পড়ে থাকে হিতাহিত ভ্রমে
ফুরিয়ে গিয়েছে ঘ্রাণ এ যাবৎ ফেলে আসা কালে
যেভাবে ফুরিয়ে যায় ছড়ানো বিষাদ ক্রমে ক্রমে
কাকে আর ভুল বলি? তা আসলে ব্যথার প্রাচীর
উঁচুনিচু কুরুশের বুনে দেওয়া নরম স্তবক
যেভাবে হাতের মাঝে রেখাগুলি অবিরাম স্থির
মনে হয় আমি সেই আলোতে মিলিয়ে যাওয়া লোক
কিছুই থাকেনা শ্লেটে, শুধুমাত্র লিখে রাখি ধুলো
কিছুদূর একা হেঁটে মুছে ফেলি বাকি রেখাগুলো
ছুরি
হত্যা জনপ্রিয় খেলা। তার চেয়ে জনপ্রিয় ছুরি
হাত বদলের পরে খুঁজে পায় সৎ অপরাধী
গুজব রটিয়ে শেষে লুকিয়ে শিরার পাশে ঘুরি
রক্তে মদ ঢেলে দিই। নিজেকে খোদাই করি, কাঁদি
বাতাস সাজিয়ে রাখে পুরানো খুনের যত ঘ্রাণ
শোভাই বাড়ায় শুধু, মৃতদেহে ভরে ওঠে গৃহ
জমানো মাথার দাম পুড়ে যাওয়া কাঠির সমান
কফিনে দেওয়াই থাকে মাংস, রুটি, টর্চ ও পানীয়
সামনে থেকেই মারি। স্ট্যাব করি এক-দুই-তিন
বেরিয়ে আসতে থাকে লোভ, ইর্ষা, ক্ষয়ে যাওয়া দেনা
সেসব বাতিল করি, রুমালে জড়াই প্রতিদিন
কাটা আঙুলের ছাপে আততায়ী চিনতে পারেনা
তবু কিছু সূত্র রাখি, যেরকম গোয়েন্দারা চায়
প্রতিটি হত্যার পর শেষ হয় ছুরিটির দায়