‘কেন আমাদের সব শেষ করে দিল’ চোখে মুখে আতঙ্ক গ্রামবাসীদের

তৃতীয়পক্ষ ওয়েব- গ্রামের সবার চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ! রংপুরের পীরগঞ্জের বড়করিমপুর গ্রামটি ঘিরে রাখা আছে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের দিয়ে। প্রসঙ্গত গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মন্দির ও বসতবাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পর থেকে বাসিন্দারা আতঙ্কে সময় পার করছেন। বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে গেছে ২১টি বাড়ির সবকিছু। আজ অন্তত ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে এই ঘটনায়।

গ্রামের লোকজনের কথায়, পাশের মাঝিপাড়া গ্রামের এক তরুণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট দিয়েছেন—এমন অভিযোগ তুলে একদল লোক সেখানে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করেন। এই ঘটনার আঁচ করতে পেরে হামলা ঠেকাতে পুলিশ মাঝিপাড়া গ্রামের ওই তরুণের বাড়িসহ আশপাশের বাড়িতে নিরাপত্তা দেয়। এরপরই উত্তেজিত শত শত লোক ওই গ্রামের পাশের বড়করিমপুর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।

দুর্বৃত্তরা তখন একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। গ্রামের বাসিন্দারা প্রাণ বাঁচাতে পালাতে শুরু করে। হামলাকারীরা গ্রামে ঢুকে অন্তত আধ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডবলীলা চালালেও পুলিশের ভূমিকা দৃশ্যমান ছিল না। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর পুলিশ গ্রামে গেলে ধানখেতে আশ্রয় নেওয়া লোকজন বাড়িতে ফেরে।

এক গ্রামবাসীর টিনের চারটি বসতঘর ও ঘরগুলোর ভেতরে থাকা যাবতীয় জিনিস পুড়ে গেছে। আগুনে পুড়েছে তাঁদের দুটি গাভি। যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় সংসারের চাকা ঘুরত, সেটিও পুড়ে শেষ।

পাশের মাঝিপাড়া গ্রামের তরুণ, যার পোস্টকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ঘটল; সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তালা ঝুলছে। পাশে বসে আছেন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্যরা। এই গ্রামের পুলিন চন্দ্র বলেন, ওই তরুণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা গতকাল সন্ধ্যার পর বাড়িতে তালা লাগিয়ে অন্যত্র আত্মগোপন করেছেন।

রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন। তিনি বলেন, হামলাকারীদের কোনো ছাড় নেই। তারা হানাদার বাহিনীর মতো বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। অভিযান চালিয়ে অন্তত ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

 

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page