উত্তরবঙ্গের পরিচালকের প্রযোজনায় খুঁজে পাওয়া না বলা গল্প… ‘বিজয়ার পরে’ Autumn flies
তৃতীয়পক্ষ ওয়েব- আমাদের প্রত্যেকের জীবনেরই কিছু না কিছু গল্প থাকে। সময় যত ফুরিয়ে আসে ততই যেন গল্প বলার তাগিদ বেড়ে যায়। শব্দ খুঁজে ফেরে কথা, শ্রোতা থাকলেও কত কথাই আমাদের শ্রুতিগোচর রয়ে যায়। ভাষা পায় না গল্পরা। গোটা একটা জীবনের শেষ সঞ্চয়গুলো জড়ো করে কাছের মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার মতো আত্মতুষ্টি খুঁজতে থাকে দুই প্রান্তিক মানুষ। অলকানন্দা এবং আনন্দ, তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন বিচ্ছিন্ন প্রিয়জনেরাও।
দুর্গাপুজোর প্রেক্ষাপটে ক্রমশ হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোকে খোঁজার চেষ্টা করেন তাঁরা। দীর্ঘ সময় পর মেয়ে মৃন্ময়ীও ফিরে আসে বাড়িতে। সঙ্গে মিজানুর। ছেঁড়া সম্পর্কগুলোকে ফের সেলাই করতে থাকেন দুজনে। কিন্তু এই সবকিছুর মধ্যেই নিজের মতো করে হঠাৎ কিছু ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে থাকে অলকানন্দা। বাস্তব ও অবাস্তবের মাঝে দাঁড়িয়ে চলে জীবনের কঠিন সারাংশের উপসংহার অনুধাবনের কাজ। অপেক্ষা চলতে থাকে ছবিটা খানিক বদলে ফেলার। কিন্তু সেই বদল কি আদৌ সম্ভব? না কি অপেক্ষাতেই দিন ফুরোয়? এমনই কিছু অপেক্ষমান জীবনের গল্প বলবে বিজয়ার পরে… Autumn flies.
ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যাবে মমতা শঙ্কর, দীপঙ্কর দে, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও মীর আফসার আলিকে। ছবিটি পরিচালনা করছেন অভিজিৎ শ্রী দাস।
ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে মীরকে। তাঁর কথায়, ‘এই ছবিতে কাজ করার অন্যতম পাওনা হচ্ছে বহু বছর পর আমি আবার স্বস্তিকার সঙ্গে কাজ করতে পারছি। ওঁর সঙ্গে ২০১৭ সালে “মাইকেল” ছবিতে শেষবার কাজ করেছিলাম। স্বস্তিকার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করছি আমি। পুজোর পটভূমিতে একটি পারিবারিক ছবি এটি।এই ছবিতে একাধিক চরিত্র রয়েছে। এর আগে কখনও আমি মমতা শঙ্করের সঙ্গে কাজ করিনি, যার ফলে এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। নতুন পরিচালক হিসেবে অভিজিৎ ভীষণ দক্ষ। অভিনেতাদের থেকে কী চাই সেই ছবি ওঁর কাছে খুব স্পষ্ট। ছবিটির জন্য অপেক্ষায় রয়েছি। আপাতত যা হবে সব “বিজয়ার পরে…”।
পরিচালকের কথায়, ‘দীর্ঘ সময় ধরে বিজ্ঞাপনের ছবি নির্মাণ করতে গিয়ে অনেকটা সময় মানুষের প্রতিদিনের জীবন বৈচিত্র্যের গল্প খুঁজতে হয়েছে। লিখতে হয়েছে খুব স্বল্প পরিসরে। সম্পূর্ণটা না বলতে পারার একটা খামতি থেকেই যাচ্ছিল কোথাও। তাঁদের গল্প শুনতে গিয়ে মনে হয়েছিল তারা সবটা বলছেন না বা বলার মতো লোক খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই একদিন নিয়ম পাল্টেই বেরিয়ে পড়লাম তাঁদের গল্প খুঁজতে বা বলা ভাল শুনতে। যাঁদের কথা কেউ শোনে না, মনযোগ দেয় না। তাঁদেরই গল্প বলবে এই “বিজয়ার পরে”।
পরিচালক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞাপনের ছবি তৈরির কাজ করেছেন অভিজিৎ শ্রী দাস। ২০১০ সাল থেকে যিনি সিনেমা তৈরির স্বপ্ন দেখছিলেন। স্বপ্ন ছিল এই সিনেমায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং শর্মিলা ঠাকুর একসঙ্গে কাজ করবেন। কিন্তু বাঙালির নস্টালজিক আইকনের চলে যাওয়ায় সেই স্বপ্নে কিছুটা মর্মাহত হয়েছিলেন তিনি। স্বপ্ন সারথীর স্বপ্ন যে থেমে থাকে না কখনো। এরপরেই ফের গড়তে বসে যান স্বপ্নকে। ‘বিজয়ার পরে… অটাম ফ্লাইজ…’ ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন রণজয় ভট্টাচার্য। সিনেমাটোগ্রাফিতে রয়েছেন সুপ্রিয় দত্ত। প্রযোজনায় এসআর জুপিটার মোশন পিকচার্স আর শিলিগুড়ির বিশিষ্ট আইনজীবী সুজিতবাবু।
‘বিজয়ার পরে… অটাম ফ্লাইজ’- এর অধিকাংশ শুটিং হবে কলকাতায়। আগামী বছর এপ্রিল-মে মাসে দর্শকদের সামনে সিনেমাটি রিলিজ করবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন পরিচালক।
ছবি সৌজন্য- ফেসবুক