c/o : চিঠি।। দীপংকর চন্দ
আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’
-দীপংকর চন্দ
“…চিঠি কিন্তু আমি লিখছি না আম্মু, আব্বু লিখছে আমি বলছি.. আমি তো লেখা শিখিনি.. মিস বলেছে কদিন পরেই আমি লেখা শিখে যাবো.. আম্মু, আব্বুটা না অনেক পচা হইছে.. সারাদিন অফিসে থাকে.. দেরি করে বাসায় আসে.. আমি বকি তো.. অনেক বকি, তবু শোনে না.. তুমি কবে আসবা.. জানো, আব্বুটা না অনেক বোকা, রান্না করতে পারে না, প্রতিদিন ভাত পুড়িয়ে ফেলে.. আমি বলি, আমি রেঁধে দেই, আব্বু বলে বড় হও মা, আমি হাসতে হাসতে মরি, ওরে! আমি কী ছোট! আমি তোমার মতো শাড়ি পড়তে পারি.. জানো আম্মু, আব্বুটা অনেক গরীব আছে, জুতা ছিঁড়ে গেছে বোঝেও না, ছেঁড়া জুতো পরে ঘুরে বেড়ায়.. নানুভাই দাদুভাই আমাকে টাকা দিছে চকলেট খেতে আমি জমিয়ে রাখি.. তুমি কিন্তু আব্বুরে বলবা না, আমি আব্বুর জন্য একটা জুতা কিনবো.. তোমার জন্য একটা শাড়ি আর.. একটা আয়না.. আম্মু তুমি না অনেক সুন্দর.. আমারে একটা টিপ পরায় দিবা কিন্তু.. আর লিপস্টিক.. আব্বুর শরীর খারাপ হইছে, খায় না ঠিক মতো, বলি দুধ খাও, কথা শোনে না.. বকি তো অনেক বকি, খালি হাসে আর লেখে.. আমি ঘুমাই ঘুমাই অনেক ঘুমাই, তবু আব্বু ঘুমায় না, আব্বু কী লেখে আম্মু.. আব্বুটা অনেক পচা, বলে, তুমি নাকি আল্লাহর বাসায় বেড়াইতে গেছো, তুমি বলো কারো বাসায় কেউ এতোদিন বেড়ায়.. আমি বকি তো অনেক বকি.. আব্বুরে বলি চলো যাই আম্মুরে নিয়া আসি.. আব্বুটা বোকা, মুখ নিচু করে থাকে, আসলে কাঁদে আমি জানি, কেমন বোকা.. বড়রা কী কোনদিন কাঁদে বলো আম্মু.. আমি আব্বুকে বলি, কী ব্যাপার, চোখে পানি কেন.. আব্বু বলে ধুলা পড়ছে.. আব্বুটা কিন্তু ভালো আছে, জানে কাঁদলে আমি বকা দিবো.. আম্মু তুমি তাড়াতাড়ি আসবা.. আমরা এখন রান্না করবো.. আমি কাছে না থাকলে আব্বু আবার ভাত পোড়াবে.. এখন যাই তাইলে.. ও আম্মু শোনো, আব্বু একটা ছোট্ট বিড়াল আনছে আমার জন্য.. জানো না বিড়ালটা অনেক ফাজিল.. আমার একটা বই ওকে দিছি.. পড়ে না কথাও শোনে না সারাদিন দুষ্টামি.. আম্মু গেলাম.. আব্বু বলতেছে ভাত নাকি আজকেও পুড়বে- তুমি আসবা তাড়াতাড়ি-“