সাহিত্যিক রত্না রশিদকে কটাক্ষ দেবাংশুর
তৃতীয়পক্ষ ওয়েব- রবীন্দ্র জয়ন্তীতে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কৃত করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যা নিয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে তুমুল শোরগোল। বিস্তর কথা চালাচালি হচ্ছে নেট দুনিয়ায়। এই সময়েই সাহিত্যিক রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, বাংলা আকাদেমির সিদ্ধান্তে তিনি অপমানিত এবং বাংলা আকাদেমি থেকে পাওয়া অন্নদাশঙ্কর সম্মান তিনি ফিরিয়ে দিচ্ছেন। এবার তাঁকে খোঁচা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুরস্কার দেওয়ার প্রতিবাদে প্রাপ্ত সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন রত্না রশিদ। তিনি জানান, ‘যেভাবে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে তার প্রতিবাদ করা দরকার’। পাশাপাশি রত্নাদেবী আরও জানান, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের লেখাগুলিকে সাহিত্য পদবাচ্য বলে মনে করেন না তিনি। যাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিলেন সে নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এই লেখিকা। এরপরেই তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আকাদেমি পুরস্কার দেওয়ার প্রতিবাদ জানাতে ২০১৯ সালে পাওয়া আকাদেমি পুরস্কার তিনি ফিরিয়ে দিচ্ছেন।
এদিকে তাঁর এই পদক্ষেপ নিয়ে ফেসবুক পোস্টে আক্রমণ করেছেন দেবাংশু। লিখেছেন, মমতার বই বেস্টসেলার, আপনার একটাও বইয়ের নাম বলতে পারবেন না বন্ধুবৃত্তের নব্বই ভাগ লোকই। দেবাংশুর পোস্ট ঘিরে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত। যা নিয়ে নেটদুনিয়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার কবিগুরুর স্মরণে কবি প্রণাম অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি দফতর। রাজ্যের তরফে আয়োজিত কবিপ্রণাম অনুষ্ঠানে এদিন নিজেই উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তিনি নিজে হাতে পুরস্কার গ্রহণ করেননি। তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন জানান, মুখ্যমন্ত্রীর তরফে পুরস্কার গ্রহণ করবেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
এরপরই বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বাংলা আকাদেমির সিদ্ধান্তে। তার ফলস্বরূপ হিসাবে রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অপমানিত হয়ে এই পুরস্কার ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে দেবাংশুর কটাক্ষ, “সম্মানীয়া রত্নাদেবী, আপনার ২০১৯ সালে অন্নদাশঙ্কর পুরষ্কার ফেরত দেওয়ার পোস্টটি দেখলাম।আপনার খোলা চিঠিও পড়লাম যেখানে আপনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিরলস সাহিত্য সাধনার জন্য বিশেষ বিভাগে বাংলা একাডেমির পুরষ্কার দেওয়াকে সত্যের অপলাপ বলে উষ্মা প্রকাশ করেছেন এবং আপনার সুপ্ত বিপ্লবী সত্ত্বা অকস্মাৎ জেগে উঠেছে ও আপনি নিজের পুরষ্কারটি ফেরত দেবেন এই দাবি রেখে বাংলার বিলুপ্ত প্রায় ডাইনোসরদের কাছে দিন তিনেকের ম্যাটিনি আইডল হয়ে উঠেছেন। হাতে গরম ফুটেজ, বোধহয় একেই বলে।”
তিনি আরও লিখেছেন, ‘যাকে এই সামান্য পুরষ্কার দেওয়া আপনার সত্যের অপলাপ মনে হয়েছে তার বই বেস্টসেলার আর আপনার বন্ধুবৃত্তের নব্বই ভাগ লোকই আপনার একটা বইয়ের নামও মনে করতে পারবেন না। যাকে নিয়ে আপনার আজ এতো সমস্যা, তিনি না থাকলে ২০২১ এ বিজেপিই আসতো,আপনি পুরষ্কার ফিরিয়ে দিয়ে তিন দিনের ফুটেজ খাওয়ার সময় পেতেন না,ওরা কেড়ে নিতো। আপনার পুরষ্কার,আপনার সম্মান,আপনার জমি,আপনার বাড়ি,আপনার ঠিকানা-এন আর সির ধাক্কায় আসামের বাঙালিদের মতো সব শূন্য হয়ে হাতে ডিটেনশন ক্যাম্পের ছাউনির পেন্সিল পড়ে থাকতো রত্নাদেবী।আর সাথে জুটতো বাংলাদেশী হবার তকমা। সেসব হয়নি,কার জন্য জানেন? যার প্রতি সযত্নলালিত ঘেন্না আজ প্রথম সুযোগেই আপনি উগড়ে দিলেন কি অবলীলায়। আপনারাই পারেন রত্নাদেবী, চোখের নিমেষে রঙ বদলাতে’।