Health: তরতাজা থাকতে চান সারাদিন, ডিটক্স ওয়াটার রাখুন সঙ্গে
Health: তরতাজা থাকতে চান সারাদিন, ডিটক্স ওয়াটার রাখুন সঙ্গে
তৃতীয়পক্ষ ওয়েবডেস্কঃ হাবিজাবি কত কিছুই তো আমাদের পেটে পড়ে। তার ওপর তেল ঝাল তো আছেই। নিজেকে ফ্রেশ রাখতে তাই পান করতে পারেন ডিটক্স ওয়াটার।
কী এই ডিটক্স ওয়াটার?
তাজা ফল, সবজি, ভেষজ উপাদান কেটে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখার পর যে তরল তৈরি হয় সেটিই হলো ডিটক্স ওয়াটার। ডিটক্স ওয়াটার বানানোর জন্য ফল বা সবজি রস না করে বরং দীর্ঘ সময় ভিজিয়ে রাখা হয়। এর ফলে সবজি ও ফলের গুণাগুণ জলে মিশতে শুরু করে। এ ছাড়াও শুধু ভেষজ উপাদান মিশ্রিত পানীয় যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করে, সেগুলোও এক প্রকার ডিটক্স ওয়াটার। যেমন লেবু জল, জিরাজল, মধু জল, কিশমিশ ভেজানো জল ইত্যাদি।
কেন খাবেন
• শরীর সুস্থ রাখতে জলের কোনো বিকল্প নেই। নরমাল জল খাওয়ার পাশাপাশি ডিটক্স ওয়াটার খেলে এটি শরীরে জমে থাকা টক্সিন উপাদান খুব সহজেই বের করে দেয়।
• শরীরে থাকা উপাদান এবং ফ্যাট একসঙ্গে হলে এই ফ্যাট বার্ন করা কষ্টসাধ্য। তাই ওজন কমানোর সময় ডিটক্স ওয়াটার শরীর থেকে দূষিত উপাদান বের করে দেওয়ার মাধ্যমে শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও এটি শরীরের বিপাক হার বৃদ্ধি করে পরোক্ষভাবে ক্যালরি বার্ন করতে সহায়তা করে।
• এছাড়া ত্বকের সুস্থতায় ডিটক্স ওয়াটার অনেক উপকারী। এটি ত্বকের দাগ দূর করা, ত্বক মসৃণ করা, ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
• ডিটক্স ওয়াটার খেলে শরীরে ভিটামিন সি’র ঘাটতি পূরণ হয়।
• ডিটক্স ওয়াটার হজম শক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে পারে।
• ডিটক্স ওয়াটার শরীরে রক্ত, জল ও পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
• শরীরের ইমিউনিটি বাড়ায় এবং কোলেস্টেরল কমাতেও ভূমিকা রাখে।
• ডিটক্স ওয়াটার(Detox water) খেলে শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হয় এবং সতেজতা আসে।
কীভাবে বানাবেন-
ডিটক্স ওয়াটার বিভিন্নভাবে তৈরি করা যেতে পারে। কয়েকটি পদ্ধতি হচ্ছে-
• যেকোনো পছন্দের ফল বা সবজির স্লাইস দিয়ে তৈরি করা যায় ডিটক্স ওয়াটার। এই ওয়াটার কাচের পাত্রে তৈরি করতে করতে হবে। এক লিটার জলে আপেল, কমলা, তরমুজ, আঙুর ইত্যাদি স্লাইস করে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তবে ফল সারারাত ভিজিয়ে রাখা ঠিক নয়। এতে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে।
• এক লিটার জলে পাঁচ থেকে ছয় টুকরো লেবু, এক টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে চার-পাঁচ ঘণ্টা কাচের বোতলে ভিজিয়ে রাখলেই তৈরি হবে ডিটক্স ওয়াটার।
• এছাড়া এক লিটার জলে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে আদা ও লেবুর কয়েকটি পাতলা স্লাইস এবং পুদিনাপাতা যোগ করে ৩-৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে তৈরি হবে ডিটক্স ওয়াটার।
কখন খাবেন
অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ডিটক্স ওয়াটার খান। তবে খালি পেটে এটি না খাওয়াই ভালো। এতে বুক জ্বালা, অ্যাসিডিটি, ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি খাওয়ার উপযুক্ত সময় সকালের খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর। এরপর থেকে সারাদিনে ১-২ ঘণ্টা পরপর ১ কাপ করে এ পানীয় খেতে পারেন। তবে দিনে ২-৩ বার ডিটক্স ওয়াটার খাওয়াই যথেষ্ট শরীরের জন্য।
বিধিনিষেধ
• একই ধরনের ডিটক্স ওয়াটার প্রতিদিন না খেয়ে বিভিন্ন ধরনের ডিটক্স ওয়াটার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। একটানা ১৫ দিন খাওয়ার পর কিছুদিন বিরতি দিয়ে আবার খাওয়া শুরু করা উচিত।
• অতিরিক্ত ডিটক্স ওয়াটার খেলে অতিরিক্ত প্রস্রাবের ফলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে। যার ফলে মাথা ব্যথা, শরীরে দুর্বলতা, বমি ভাব হতে পারে।
• একটানা দীর্ঘদিন ডিটক্স ওয়াটার খেলে বিপাক হার কমে গিয়ে শরীরের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
• যাদের কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিসের মতো বিভিন্ন জটিল রোগ রয়েছে তাদের এ ধরনের পানীয় খাওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নেওয়া উচিত।
• রোজ ফ্রেশ ডিটক্স ওয়াটার পান করার চেষ্টা করতে হবে। ২-৩ দিনের আগের বানানো ডিটক্স ওয়াটার খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।