গুচ্ছ কবিতা।। অর্ণব চৌধুরী
অশ্রুত
অমোঘ প্রশংসা পেলে
সকলেই খুশি হয়,
আমিও ক্রমশ সেই নাটকে জড়াই
নিজ মুখে ঘেঁটে তুলি ছাই
দেখি কোনও জ্বালা নেই,
রঙহীন আকাশের মতো বাড়িটির গায়ে
অবেলায় ফুটে ওঠে ফুল
অযথা প্রশংসা পেয়ে ভাবি
এইসব সাজানো আঁধার
কলঙ্ক নির্ভুল…
অধরা
দিন কাটে, রাত কাটে
ডুবে থাকি ঘুমে
খুঁজি শুধু আমার স্বরূপ
সাফল্য আকাশে ওড়ে
সাফল্য যখন ভেঙেচুরে
আকাশে নিশ্চুপ
দেখি,
আমার-ই বীর্যবিন্দু থেকে
ধেয়ে আসে নীরবতা
একটি সংকল্পের মতো ওড়ে
কার অর্ধভুক্ত কথা
ইছামতী
ইছামতী পড়ি আজ, সন্ধে কাটে জলের ছায়ায়
যে ভাষা গিয়েছে বয়ে, বহুদূর অমুল সম্ভব
উনিশ শতকে ভরা বাংলাদেশ, নদীর হাওয়ায়
নীল-আফিমের গন্ধ, দালালেরা তখন-ও দানব
একুশ শতকে এসে, যখন প্রজন্ম গ্যাছে ভুলে
সহস্রের কোটি মন, ফেলে আসা কীসের গহব্বর
লিপিকুশলতা নাকি কারুকার্যে খুব ওঠে দুলে
ছন্দেগাঁথা বেনী দুটি আজ তবে কতটা বিস্তর!
যে ভাষা গিয়েছে বয়ে, তা কি আর ফিরবে কখনো
জলের ভিতরে তুমি সেইকথা লিখেছ আবার
কেন মন পড়ে থাকে, দেশ নাকি মাটি অন্যকোনো
সাধারণ ভাষাখানি বাঁচিয়ে রেখেছে পরিখার
ইছামতী-পাড়া দিয়ে চলে যাই একা চুপিচুপি
নদীর ওপারে জ্বলে অন্ধকারে সারি সারি কুপি
হে অতীত
শত্রু আত্মা বন্ধু আত্মা গর্জে ওঠে রোজ
বিচ্ছুরিত অন্ধকার, আসলে কি আলো!
কীসের বাধ্যতা তাকে বাসে এতো ভালো
আমি জানি এ আঁধার এখন সহজ
তুমি জানো কিছু কিছু, আমি আরও কম
সে জানে নক্ষত্র, আর ভাসে কল্পান্তরে
কিছু যে জানে না সেকি লুপ্ত হবে ভোরে?
নাকি তার কাছে হাঁটুমুড়ে বসে যম
হাড়কাটা গলি যাই কিংবা ইছামতী
শত্রু বন্ধু নেই, ইতিহাসে কেউ নেই
ধূসর মলিন যত জলের ভীড়েই
স্নান করতে নামে দেখি সতী ও অসতী
হে-বিস্ময়, কোথা থেকে মিশেছ কোথায়
আমার জীবনখানি হেলায় হারাই