গুচ্ছ কবিতা।। অজিত পাত্র

ভাঙাদিন

এক ভাঙাভাঙা দিন

আমার সঙ্গে।

ওই দিন আর আমি,

আমি চলেছি-

জীবন যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত

আমি চলেছি।

 

শুধু তোমার জন্য হার আসেনি,

ক্লান্ত অবসন্ন,

তবুও মাড়িয়ে চলেছি

এক-একটা দুঃখ।

 

ভাঙাভাঙাদিন আর আমি,

আমি চলবোই।

আমার চলার মধ্যে তোমার বেঁচে থাকা,

আমি চলবোই চলবো।

 

ট্রেন কামরায়

 

ইস্‌ কী মিষ্টি তোমার দেওয়া মুড়ি!

খুশি, আনন্দ, প্রেমে আত্মহারা মেয়েটা;

খুশি, আনন্দ এতটা যে

কখন হাওয়ায় ছড়িয়ে মুড়ি

ট্রেনের এ কামরা থেকে

আরেক কামরায় উড়ে যায়।

 

প্রেমাত্মাহারায় যখন জ্ঞান ফেরে

শূন্য ঠোঙার দিকে তাকিয়ে

কেঁদে ফেলে।

 

হকার তখন কামরার পর কামরায়

চলেছে কত জোড় কোড়া

প্রেমিকদের মুড়িতে তেল, লঙ্কা, বাদাম

চানাচুরের মিক্সচার বানাতে বানাতে।

 

ইস্পাত এক্সপ্রেস

সিনি-রাজখরসুয়া

 

 

মা পড়ছে

 

আঁধার থেকে মা পড়ছে,

পড়া পড়ছে মা-

‘’মম্মি…মম্মি…সি ও ডব্লু-কাও?’’

পড়া পড়ছে মা।

 

‘ডি ও জি, বল- ডগ’’

পড়া পড়ছে মা।

 

ছেলে একদিন বড় হবে

মম্মির চেয়ে কত বেশি পড়া পড়বে

স্কুলগেট থেকে যাওয়া-আসা মা।

ছেলের সঙ্গে পাঠ পড়ছে

সেই মা।

 

ঝাটিঝর্ণা

 

শুধু ভাবি

 

শ্রাবণের আকাশ থেকে

একটুকরো সোনালি রোদ

ছিটকে পড়ছে

আমার লাগানো ফুলগাছগুলির উপর।

 

গাছের পাতাগুলি টানটান হয়ে

মেলে যাচ্ছে,

চকচক রোদে তোমার

সোনালি পা ঝলসে উঠছে।

হাত মোচড় দিয়ে টানটান হয়ে সোনালি রোদে অলস ভাঙছ,

পৃথিবীটাও টানটান হয়ে যাচ্ছে।

 

আমি দুর্বল চোখে তাকিয়ে

মেঘ, বর্ষা,

বাতাসকে আহ্বান করছি,

শুধু দুর্বল মনে তোমাকে নিয়ে

ভাবব বলে।

 

শাসন

 

অজিত পাত্র। জন্ম ৩রা জানুয়ারি ১৯৭১, ভারতের অধুনা ঝাড়খণ্ড রাজ্যের শাসন গ্রামে। বাংলা ভাষায় পড়ালেখা আরম্ভ করলেও পরে হিন্দি ভাষা সাহিত্যে এমএ করেন। ছাত্রজীবন থেকে বাংলা ভাষায় একান্তে লেখালেখি আরম্ভ করেন। পরে ওড়িয়া সাহিত্যে একের পর এক কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ প্রকাশিত হতে থাকলে অজিত পাত্র ওড়িয়া সাহিত্যের এক পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন।

 

 

 

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page