কবিতা গুচ্ছ।। শানু চৌধুরী
১.
বাগানের ফুলগুলোকে দেখি। শুকিয়ে যাওয়ার আগে অপেক্ষা করি,নবীকরণের। অথচ ইভার পায়ের শব্দে তাদের ঘুম ভেঙে যায়। বিবর্ণ হয়,তাদের সমস্ত নরম মুখ। এভাবে দুঃখ পেলে,ফুলগাছ একা হয়। খলখলে হাসির ভিতর মূর্ছা যায়,দাস্তান। আসলেই আমি চাই,স্বাভাবিক, উপভোগ্য পথ। ঈশ্বরের কাছে পৌঁছতে সহজ পথ। তাও-এর মতো এক সাধনা ফুলেরও আছে। আছে একেকটা উদযাপন প্রক্রিয়া। তবে বলি,আমার কৌতূহল আমাকে তাড়িয়ে মারছে। বলছে, অস্তিত্ববান প্রতিটা প্রাণ কিসের ফল? পাখির গান আজকাল ভালোলাগে। তারও এক আবেদন আছে! আছে তার প্রেমাস্পদ যাতায়াত। এইতো সেই বিশুদ্ধ প্রপঞ্চ, খেলা করছে আর জানালার দিকে তাকিয়ে আসন্ন সন্ধ্যার ভিতর গাছগুলোকে ডুবে যেতে দেখছে ইভা। একটা লিকলিকে কালো ছড়ি নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মিলিয়ে যাচ্ছে মনসুর…আপ্যায়নের বিষয়টিকে নিয়ে তখন আর কষ্ট হচ্ছে না কারো…
২.
পৃথিবীর ঝাঁক থেকে খুলে গেল,
গাজর রঙের সারস…
কাজের হাঁপানি কমে এলে
যেসব কল্পিত পাথর,পিতলের আভাস
আমাদের কানে এসে লাগে,
তার কিছু ভাষা আছে
পাহাড়ি ঘরের জানালা,
তোমাদের নীলে কি ছেয়েছে, কারো অন্ধ কাপড়?
কুয়াশায় আজকাল প্রচুর গন্ধক!
রাগের মতো লুটিয়ে আছে
এতো পরিশ্রম নয়
সাক্ষাতের আগে,ব্যথার বড়ির মতো বেদনা
মায়ের মাথা ধরার বয়ানের তুলনায় যেন
প্রতিটা গ্রীক নাটকের জল,গড়িয়ে পড়ছে
যেখানে স্নানে বসার আগে যুক্তি কেটে যায়!
৩.
মনস্বী নামের মাহাত্ম্যে
…..
আমাদের মাঝে কোনো উৎকোচ নেই
সামান্য অন্ধকার হয়ে এলে দেখি,
কারো মাথা চলে গেছে বিপুল হাওয়ায়
তোমাদের উপোস ধোয়ার মতো মিলিয়ে যায়,
হাতের পাঁচ আঙুল থেকে ছন্নছাড়া হয়
ছাদ দেওয়া ঘর-বাড়ি আর মানুষের কালি
আসনপিঁড়ি করে বসে আছে হৃদয়ের ঠাকুমা
ধুলো এসে পড়ে ভাতের থালায়…
শীত চলে যায় যখন মনস্বী নামের মাহাত্ম্যে
জোৎস্না ও শ্যামলীর হাসি নিয়ে
শামশের কেবল কবিতা লিখতে জানে
দুর্বোধ্য হাসিকে স্থাপত্য বানাতে জানে সে
আমি কিছুই জানি না,তালকানা লোকের মতো
চিরকাল বিষণ্নতাকে দেখি,
দেখি সমাধির ওপর পড়ে থাকা এক আন্দাজহীন নোলকের ভার
এদিকে গোলাপের ঘ্রাণ ভারি হয়
মরে যায় উইপোকা ছেয়ে ফেলা গাছ
তাহলে বলো, আমি কিভাবে তোমাদের কাছে যাবো!