গুচ্ছ কবিতা ।। মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী
উষ্ণ বিকেল
❏❏
বৃষ্টির তাপোষ্ণ বিকেল
অথইজলে
ডুবেও
হেসে ওঠে রাজহংসী নদী
হাঁসগুলো সবুজ পাহাড় দ্যাখে
—সাঁতার কাটে
আর
মোচড়ানো গলার বাহার
দেখায় নিরবধি।
মোহান্ধ জীবনের ধান্দা
❏❏
পাখিরা ওড়ে ক্ষুব্ধ শহরে
আর ডানাঝাপটায়—ভালোবাসার অসীম তৃষ্ণায়
দৌড়ায় সুভাষিণীর নেশাকাতর চোখ
ছোটে মোহান্ধ জীবনের ধান্দায়
আমার উদাসী মন থাকে উচাটন
বিনিদ্র রাতে তারাদের হাত ছুঁয়ে
পেতে চায় কাঙ্ক্ষিত কবিতার স্পর্শানুভব।
কবিতাপ্রেম
❏❏
ঝোড়ো মেঘকে সাফ জানিয়ে দিয়েছি
আকাশ ভাঙা বৃষ্টির জলে— তোমার সৃষ্ট প্লাবনে
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারো!
তোমরা শিকলে বেঁধে রাখতে পারো আমার দুই হাত
অথবা; আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দাও যদি উজানি নদীর বহতায়
যদি কেড়ে নাও সকলে মিলে আমার
সবুজ কালির সোনালি কলমের নিব
কিংবা; স্বপ্নপরী জর্দা মেশানো
আমার মুখের নিপুণ পানের খিলি
তবুও অবিরাম লিখে যাবো কবিতা
যদিও থাকে পঙক্তিতে পঙক্তিতে ভুল
হয়ে ওঠেনা কবিতার ছন্দ; থাকেনা অন্ত্যমিল।
তারপরও—
লিখে যাবো সাদা কাগজে অনায়াসে প্রতিদিন
পান, সুপারি, পাথর পোড়ানো চুন, জর্দার
যেমন থাকে মিল।
আরব কবি মাহমুদ দারবিশ যথার্থই অনুভব করেছন
কবিতা তাঁর ‘ ভাতের নুন—চোখের দৃষ্টিরস’।
আর আমি অন্তরদৃষ্টিতে দেখি;
—কবিতা আমার প্রাণ
স্বর্গের অপ্সরী আরাধ্য ধন,
যদি না আসে ফিরে অনুভূতি কুড়ায়ে
সেদিন যে যাবো ধরা থেকে হারায়ে
কবিতাই নিখাদ প্রেম, ফিরে পাওয়া ভালোবাসা
গভীর বিষাদ, আছে যতো বিরহ, —অনন্ত বিচ্ছেদ।