কেশর থাকত রাজকুমারীর রূপচর্চাতেও
তৃতীয়পক্ষ রূপকথা- জাফরান বা কেশর- যার নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য। আগেকার দিনে রাজকন্যাদের রূপচর্চার উপাদানের মধ্যে অন্যতম ছিল এই কেশর। আদতে এটি হল ফুলের রেনু। যার একটা মিষ্টি গন্ধও রয়েছে। রান্না থেকে রূপচর্চা সবেতেই দারুণ কাজে লাগে এই জাফরান (Saffron)।
মূলত ইরান, ভারত এবং গ্রিসের কিছু জায়গাতেই জাফরান উৎপাদন হয়। ক্রোকাস স্যাটিভা (Crocus Sativa) নামের এক উদ্ভিদের ফুল শুকিয়ে কেশর তৈরি হয়। অনেকে মনে করেন জাফরানের আদিভূমি হল ইরান। ঐতিহাসিকদের মতে, স্পেন হল জাফরানের আদি উৎসস্থল। জাফরান উৎপাদনে ভারত সারা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আগে কেবলমাত্র জম্মু ও কাশ্মীরে চাষ হত, এখন হিমাচল প্রদেশেও চাষ করা হয়। আগস্ট মাসে চারা রোপন করা হয় এবং অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ফুল তোলা হয়।
দামী এই মশলা খাবারকে যেমন সুস্বাদু করে তোলে, তেমনই নানা শারীরিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। যে কারণে জাফরানকে “রেড গোল্ড”ও বলা হয়।
- জাফরানের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সর্দি কাশির পাশাপাশি হার্টের সমস্যা, ব্লাড সুগার, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
- সব সময় বাজার চলতি যে কোনও প্রোডাক্টের থেকে ঘরোয়া উপকরণ হিসেবে অনেক ভাল হয়। কাঁচা হলুদ, দুধ, মধু, বেসন, চন্দন, কেশর দিয়ে রূপচর্চার কোনও তুলনা নেই। এতে ত্বক ভেতর থেকে ভাল থাকে। উজ্জ্বল দেখায়। এছাড়াও মুখের দাগ ছোপ দূর করে। ত্বকে বলিরেখা কিংবা বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
যে ভাবে কেশর ফেসপ্যাক বানাবেন
- তিনটে কেশর নিয়ে দু চামচ দুধে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর এর সঙ্গে চন্দন আর কাঁচা হলুদ ভাল করে মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। শুকনো হলে ধুয়ে ফেলুন।
- আগের রাতে দুধে কেশর ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ওর সঙ্গে এক চামচ মধু আর মুলতানি মাটি মিশিয়ে ভাল করে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ইষদুষ্ণ গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক হবে কোমল
- ক্লিনজার হিসেবেও ব্যবহার করতে পরারেন টোনার। কাঁচা দুধে কয়েক দানা কেশর ফেলে ফ্রিজে রেখে দিন। রাতে তুলো ভিজিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। এতে ভাল যেমন পরিষ্কার হয় তেমনই ত্বক থাকে নরম।
- দু থেকে তিনটে কেশর, টকদই, বেসন, দুধের সর আর হাফ চামচ লেবুর রস দিয়ে প্যাক বানিয়ে নিন। স্নানের আগে পুরো শরীরে এই প্যাক লাগাতে পারেন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন। ব্যাস এতেই কেল্লাফতে। খুলবে ত্বকের জেল্লা।