মাস্ক পরে মুখে দাগ হচ্ছে? রইল দাগ না পরার কয়েকটি টিপস
তৃতীয়পক্ষ রূপকথা- এখন বাইরে যেতে গেলে মাস্ক আমাদের পরতেই হচ্ছে। নর্মাল একটা জিনিস হয়ে গেছে। কিন্তু সমস্যা হয় তখন, যখন দেখি মাস্ক খুললেই মুখে, কানের পাশে বা নাকে দাগ হয়ে যাচ্ছে আর এই দাগ তোলাও বেশ কষ্টের। এই দাগ যাতে না হয় তার উপায় রইল নিচে-
১. প্রথমে মুখ পরিষ্কার করুন
মাস্ক থেকে যাতে দাগ না হয় তার জন্য মুখ পরিষ্কার থাকা খুবই দরকার। মুখের ময়লা বা তেলের ওপর যদি মাস্ক পরা হয় তাহলে তাতে মাস্ক সহজে চেপে বসে। এতে দাগ বেশি হয়। তাই মুখ পরিষ্কার রাখা খুব দরকার।
একটা মাইল্ড ক্লিনসার নিন। দেখবেন যেন এটি অতিরিক্ত তেল তুলে ফেলার ক্ষমতা রাখে। মুখ এই ক্লিনসার দিয়ে ধুয়ে গরম জল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। অযথা মুখ ঘষবেন না। এইভাবে মুখ পরিষ্কার করে মাস্ক পরুন, দাগ সহজে হবে না।
২. ভালো ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার
একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার আপনার ত্বকের হাইড্রেটেড থাকার জন্য খুব ভালো কাজ দেয়। মুখ হাইড্রেটেড থাকলে স্কিন নরম থাকবে। এই নরম স্কিনের ওপর মাস্ক এঁটে বসতে পারবে না।
অন্যদিকে ত্বক যদি শুষ্ক হয়ে থাকে, তাহলে দাগ বা র্যাশ বেশি হবে। তাই মুখ পরিষ্কার করে ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার লাগান। দেখবেন ময়েশ্চারাইজার যেন অয়েলি না হয়।
আজকাল অ্যাকোয়া বেস নন গ্রিজি অনেক ভাল ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। সেগুলি ব্যবহার করতে পারেন।
৩. মেকআপ বেশি না করাই ভালো
মেকআপ মানেই সেটি খানিক চড়া হবে। হ্যাঁ, আপনি ম্যাট ফিনিস ব্যবহার করলেও মাস্কের সাপেক্ষে সেই মেকআপ চড়া-ই। মাস্ক পরা থাকলে স্কিনে ভালো করে হাওয়া খেলতে পারে না। ফলে মেকআপ এবং মাস্ক থেকে বেরোতে না পারা ভাপ মিলে আপনার স্কিনের থেকে তেল নিঃসরণ বাড়িয়ে দিতে পারে। স্কিনের লোমকূপও কিন্তু এই তেলের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে ময়লা জমবে।
আর এই বর্ষার সময়ে আর্দ্রতা বেশি। এই আর্দ্রতায় ঘাম বেশি হচ্ছে। তাই সেই ঘাম মাস্কের নিচে থেকে ময়লা হওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তখন কিন্তু মাস্ক থেকে দাগ পড়াটা খুব সহজ হয়ে যায়।
৪. পরিষ্কার মাস্ক ব্যবহার করুন
আমাদের কানের পাশে সবচেয়ে বেশি ময়লা জমে। কারণ সেখানে খাঁজ আছে আর খাঁজে ময়লা জমা সহজ। আর সেই ময়লা আপনার মাস্কেও লেগে যাচ্ছে ঘামের সঙ্গে। সেই মাস্ক আপনি যদি পরিষ্কার না করে পরেন, তাহলে সেই ময়লার থেকেই আপনার মুখে দাগ চলে আসতে পারে। তাই নিয়মিত মাস্ক পরিষ্কার করে পরা উচিত। পারলে বেশ কয়েকটি মাস্ক কিনে রাখুন আর বদলে বদলে পরুন।
এক্ষেত্রে আরেকটি কথা বলার। আমরা সাধারণ মানুষরা অনেকেই সার্জিকাল মাস্ক আজকাল ব্যবহার করছি। এই মাস্ক কিন্তু একবার ব্যবহারের পর আবার ধুয়ে ব্যবহার করার জন্য তৈরি হয়নি। তাই সার্জিকাল মাস্ক ব্যবহার করলে তা ব্যবহারের পর ফেলে দিন। এই মাস্ক ধুয়ে পরা যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনই আবার আপনার স্কিনে র্যাশ বা দাগ হতেও পারে সহজে এর থেকে।
৫. মাস্কের স্ট্রিপ কিসের দেখে নিন
কোনও শক্ত বা টাইট জিনিস দিয়ে যদি মাস্কের স্ট্রিপ বা ফিতেটা তৈরি হয় তাহলে কিন্তু মাস্ক থেকে দাগ একদিনেই পড়তে পারে। আমরা সস্তার অনেক রকম মাস্ক পরছি অনেকে। কিন্তু সেগুলো খুব একটা ভালো যেমন শরীরের জন্য নয়, তেমনই ভালো নয় স্কিনের জন্যও।
এন-৯৫ বা একটু দামী মাস্ক, যেগুলো চিকিৎসকরা বলছে ব্যবহার করতে সেগুলো দেখুন। দেখবেন সেগুলোর স্ট্রিপ খুব একটা টাইট হয় না। আর ইলাস্টিক দেওয়া মাস্ক তো একেবারেই পরবেন না।
৬. মাস্কের নিচে ওষুধ একদম নয়
আপনাকে হয়তো ব্রণ, ব্রণর দাগ, ফুসকুড়ি এসবের জন্য কোনও ওষুধ লাগাতে হয়। বা হয়তো মুখে কেটে গেছে বা খানিক গরম তেল এসে পড়ে দাগ হয়েছে। তার জন্যও আপনি ওষুধ লাগালেন আর তার ওপর মাস্ক পরে নিলেন। কিন্তু এটা আপনার মুখে দাগ তৈরি হওয়ার রাস্তা আরও প্রশস্ত করল। মাস্কের তলায় জমা ঘামের সঙ্গে সহজেই এই ওষুধ বিক্রিয়া করতে পারে। তার থেকে ব্রণ বা র্যাশের সমস্যা তো বাড়বেই, লালচে দাগ পড়তে পারে।
৭. ঘরোয়া উপায়
এবার আসি হাল্কা দাগ চলে এলে সেটা কীকরে মেটাবেন। আপনি হয়তো দেখলেন হাল্কা লালচে দাগ হয়েছে। এই দাগ থেকেই কিন্তু পরে কালো দাগ হয়ে যাবে। তাই সামান্য দাগ থাকলে সেটাও তোলা উচিত যাতে তার থেকে দাগ না আরও গভীর হয়। তার জন্য একটি সুন্দর ঘরোয়া উপায় আছে। রবিবার ছুটির দিন একদিন সপ্তাহে করুন।
আলু তো খুব ভালো দাগ তোলে। আলুর থেকে রস বার করে তাতে মধু মিশিয়ে দাগের ওপর লাগিয়ে রেখে দিন। ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এতে দাগ অনেক হাল্কা হয়ে যাবে।
এবার আপনি এই নিয়মগুলি মেনে বিন্দাস মাস্ক পরতে পারেন। আর কোনও দাগ আসবে না আপনার হাসি মুখের পথে।