ঘুম থেকে উঠেই এই কাজগুলি করুন

আমাদের সবার জীবনে কিছু না কিছু রুটিন রয়েছে, তবে ঘুম থেকে উঠে কোনও নিয়ম মেনে চলি না কেন? কোনওদিন হয়ত আলস্য আসে, তো কোনওদিন এতটাই এনার্জাইজড লাগে আজই সারা সপ্তাহের কাজ শেষ করে ফেলব! জানেন কি, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অন্তত একটা রুটিন মেনে চলতে পারেন, তা হলে সারা দিনের মোকাবিলা অনেক বেশি এনার্জির সঙ্গে করতে পারবেন?

সকালে ওঠার পর করা প্রথম কয়েকটি কাজই নাকি ঠিক করে দেয় আমাদের সারা দিনটা কেমন যাবে! দেখ নিই তবে কি সেই কাজগুলি-

আড়মোড়া ভাঙুন: ভাবছেন, উল্টোপাল্টা বলছি! আসলে আড়মোড়া ভাঙা মানে, কী বলুন তো? ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, আড়মোড়া ভাঙাল মানে আসলে হল স্ট্রেচিং। সারা রাত ঘুমের পর শরীর যখন ঝিমিয়ে আছে, তাকে এক নিমেষে চাঙ্গা করে দিতে পারে এই আড়মোড়া ভাঙা! তাই প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়িয়ে ভাল করে আড়মোড়া ভাঙুন!

এক গ্লাস জল খান: খালি পেটে জল খাওয়ার অনেক উপকার। এটি আমাদের খাদ্যনালীতে সারা রাত ধরে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার করে দেয় এবং হজমের উন্নতি করে। তাই সকালে উঠেই আগে এক গ্লাস জল খেয়ে নিন।

একটু ধ্যান করে নিন: না, মুনি-ঋষিদের মতো গম্ভীর মুখে ধ্যান করতে বলছি না। পাঁচ মিনিট শান্ত হয়ে বসুন। চোখ বন্ধ করে পুরো দিনটা মনে-মনে একবার ছকে নিন। কিংবা হালকা কোনও গান বা মিউজিক চালিয়ে স্রেফ দশটা মিনিট চোখ বুজে আরাম করুন। দেখবেন, তাতেই কত ফ্রেশ লাগছে!

সকালের মিঠে রোদ গায়ে মেখে নিন: সকালে ঘুম থেকে উঠে একবার বারান্দায় দাঁড়ান, সম্ভব হলে ছাদে যান। মিনিট ১০ সকালের মিঠে, নরম রোদে নিজেকে সেঁকে নিন। রোদের ভিটামিন ই আপনার ত্বকে প্রবেশ করবে এবং আপনাকেও করে তুলবে সকালের মতোই নরম আলোয় উজ্জ্বল!

এক্সারসাইজ করুন: হাড়ভাঙা এক্সারসাইজ করতে বলছি না। অন্তত কিছু ফ্রি-হ্যান্ড স্ট্রেচিং করে নিন কিংবা যোগ ব্যায়াম বা প্রাণায়ামও করতে পারেন। সারা দিনের এনার্জির জন্য এটুকু তো করা যেতেই পারে, তাই না!

গরম কিছু খান: সেটা চা, কফি, হট চকোলেট, কোনও হেলথ ড্রিঙ্ক, যা কিছু হতে পারে। প্রয়োজনীয় জিনিসটি হচ্ছে, গরম! এই গরম ব্যাপারটাই এক ঝটকায় ঘুমজনিত ধুমটা কাটিয়ে দেবে।

সারা দিনের প্ল্যানিংটা সেরে ফেলুন: ঘুম থেকে উঠে বাকি সবকিছু করে এবার পালা সারা দিনের প্ল্যানিংয়ের। একটা খাতায় লিখে ফেলুন সেদিনের কাজের লিস্ট! ব্যস, সারা দিনের জন্য আপনি তৈরি!

যে কাজগুলো এক্কেবারে করবেন না

একদম আরও পাঁচ মিনিট শুয়ে নেওয়া যাক বলবেন না: এটা অস্বীকার করে লাভ নেই, অ্যালার্ম বন্ধ করে দিয়ে আরও একটু শুয়ে নিই বলা আমাদের সকলেরই বদ অভ্যেস! কিন্তু এটা করে আসলে কোনও লাভ তো হয়ই না, উল্টে ক্ষতি হয়! সাধারণ ঘুমের ঘোর পূর্ণ হতে অন্তত দেড় ঘণ্টা সময় লাগে! তাই ওই পাঁচ মিনিট বাড়তি ঘুমে ক্লান্তি ও আলস্য বাড়ে বই কমে না!

ফোন খুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ডুব দেবেন না: বর্তমান যুগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এটি। ঘুম থেকে উঠে বালিশের পাশা রাখা ফোনটি খুলে আমরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে ডুবে যাই! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিল্যাক্সড ঘুমের পর আপনি যদি গাদা-গাদা তথ্য দিয়ে শরীর-মস্তিষ্ককে হঠাৎ চাঙ্গা করে তোলেন, তা হলে বিপদ! তাই ফোনটি যেখানে আছে, সেখানেই থাকুক বরং।

বাসি বিছানা ফেলে রাখবেন না: পরে তুলছি বলবেন না। কারণ, এই বিছানা তোলার মাধ্যমেই কিন্তু আপনারা পুরো দিনটার জন্য নিজেকে নিজেরই অলক্ষে তৈরি করে ফেলছেন! আর ঘরের মধ্যে বাসি বিছানা পড়ে থাকলে কারই বা ভাল লাগে বলুন তো!

টিভি চালিয়ে বসবেন না: আমি তো সকালে উঠে ধার্মিক চ্যানেলে উপদেশ শুনি, তাতে দিনটা ভাল যায়! মোটেও না, টিভি খোলা হয় ধার্মিক চ্যানেলে, তারপর নিউজ, তারপর এন্টারটেনমেন্ট, তারপর গতকালের মিস হয়ে যাওয়া সিরিয়াল…ধারাবাহিকতা কিন্তু চলতেই থাকে! তাই টিভি বন্ধই থাকুক।

ই-মেইল চেক করবেন না: চন্দ্র-সূর্য-পৃথিবী, সব চলছে। আপনিও ভীষণ ব্যস্ত। কিন্তু সকালে উঠেই ফোন খুলে কাজের-অকাজের মেইল চেক করতে বসবেন না। এতে স্ট্রেস বাড়ে বই কমে না!

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page