হার্টের স্বাস্থ্য ফেরাতে বাঁদিকে ফিরে ঘুমোলে হবে ভাল

আমাদের শরীর কীসে যে ভাল থাকে, আর কীসে মন্দ, সেটা জেনে ওঠাটাই মস্ত বড় ঝক্কির কাজ। যেমন ধরুন, এখন শোনা যাচ্ছে বাঁ দিক কাত হয়ে বা পাশ ফিরে ঘুমানোর উপকারিতা অনেক। এতে নাকি বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। নানা ধরনের স্লিপিং পজিশন আছে, যার কোনওটা উপকারী, কোনওটা নয়। কিন্তু বাঁদিকে পাশ ফিরে শুলে যে নানা উপকার পাওয়া যায়, সে বিষয়ে সম্প্রতিই জানা গেছে।

  • বাঁদিকে ফিরে ঘুমালে রক্তের প্রবাহে উন্নতি ঘটে। এতে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের ক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিও তরতাজা থাকে। তাছাড়া শরীরের বাঁদিকে যেহেতু হার্টের অবস্থান, তাই সেদিকে ফিরে শুলে হার্টের উপর চাপওপড়ে কম, যে কারণেও হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
  • বাঁদিকে ফিরে ঘুমালে প্লীহা বা spleen -এর ক্ষমতা বাড়ে, যে কারণে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানগুলি চটজলদি বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না। বিশেষ করে রক্তে টক্সিক উপাদান জমে গিয়ে নানা রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা দূর হয়।
  • পাকস্থলী এবং অগ্ন্যাশয় আমাদের শরীরের বাঁদিকে থাকে। তাই তো বাঁ পাশে ফিরে শুলে খাবার ঠিক মতো পাকস্থলী হয়ে অগ্ন্যাশয়ে পৌঁছাতে পারে। ফলে বদহজম হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
  • শুধু তাই নয়, এই ভাবে ঘুমোলে শরীরে জমে থাকা বর্জ্য এবং টক্সিক উপাদানগুলি ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে বৃহদান্ত্র হয়ে কোলনে চলে আসে, যে কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হওয়া আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি শরীর বিষ মুক্ত হওয়ার কারণে ছোট-বড় অনেক রোগই দূরে থাকতে বাধ্য হয়।
  • আয়ুর্বেদ শাস্ত্রও বাঁদিকে ফিরে ঘুমানোর পক্ষে বলেছে। প্রাচীন এই শাস্ত্র মতে, খাওয়ার পরে ১০ মিনিট বাঁ দিকে ফিরে শুলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে গ্যাস-অম্বল এবং বদহজমের মতো সমস্যা ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।
  • ছোটবেলায় দিদা-ঠাকুরমার মুখে নিশ্চয়ই শুনেছেন যে, পাশ ফিরে শুলে নাক ডাকা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কোন দিকে পাশ ফিরলে এমন উপকার মেলে, সে কথা কি জানা আছে? বাঁদিকে ফিরে ঘুমলে obstructive sleep apnoea-এর মতো সমস্যার প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। ফলে নাক ডাকাও বন্ধ হয়ে যায়।

বাঁ পাশ ফিরে শোওয়ার অভ্যেস করবেন কীভাবে

ঘুমের মধ্যে কোন দিকে ফিরে শুচ্ছেন, তা খেয়াল রাখা সম্ভব নয়। তাই আজ থেকেই একটা কাজ করুন। বাঁদিকে ফিরে শোওয়ার পরে পিঠের কাছে একটা বালিশ রেখে দিন। এর ফলে ঘুমের মধ্যে অন্য পাশে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা আর থাকবে না। অনেকে পিঠের কাছে নরম বল রেখেও শুয়ে থাকেন। এমনটা করলেও ঘুমের মধ্যে পজিশন বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। সপ্তাহখানেক এভাবে বালিশ বা বল রেখে শুলেই দেখবেন বাঁদিকে ফিরে শোওয়ার অভ্যাস হয়ে গেছে।

 

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page