সপ্তসুর শুনতে চান, এই মন্দিরের গায়ে রাখুন হাত!
তৃতীয়পক্ষ ওয়েব- আমাদের দেশ প্রাচীন স্থাপত্যের দিক দিয়ে সবসময়ই এগিয়ে। বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন নিদর্শনগুলি কারুকার্যের অসামান্য প্রমাণ। এই স্থাপত্যশিল্প কয়েক’শ শতাব্দী ধরে মানুষের মনের মধ্যে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। বিজয়নগর রাজ্য একসময় ধনী সাম্রাজ্য একসময় পরিচিত ছিল অসামান্য স্থাপত্য সৃষ্টির জন্য। এই সময়েই নির্মিত হয় হাম্পির বিজয়ভিট্টালা মন্দির বা ভিট্টালা মন্দির যা ‘মিউজিকাল পিলার।
অসাধারণ কারুকাজের জন্য পরিচিত হাম্পির ভিট্টালা মন্দিরটি প্রাচীন স্থাপত্য। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অন্যতম রাজা দেবার্য ২- এর শাসনকাল পঞ্চদশ শতাব্দীতে এই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল। রাজবংশের সর্বাধিক বিখ্যাত শাসক কৃষ্ণদেবার্য মন্দিরের অনেক অংশ নতুন করে নির্মাণ করেছিলেন বিজয়নগর।
এই মন্দিরের একটি বৈশিষ্ট্যই হলো, বাদ্য স্তম্ভ বা মিউজিকাল পিলার। যার গায়ে হাত দিয়ে হালকা আঘাত দিলেই ভেসে আসে সঙ্গীতের সাত সুর। মোট ৫৬টি স্তম্ভের এক একটি স্তম্ভ থেকে তৈরি হয় এক একটি বাদ্যযন্ত্রের শব্দ। একসময় সারা বিশ্বের পর্যটক এই মন্দিরের সৌন্দর্যে এবং সঙ্গীত স্তম্ভগুলো দেখে মুগ্ধ হতেন। তবে আজ সেগুলো প্রায় ধ্বংস প্রাপ্ত।
এই মন্ডপের প্রধান স্তম্ভগুলো বাদ্যযন্ত্রগুলোর অনুকরণে নকশা করা। প্রতিটি মূল স্তম্ভ সাতটি ছোট ছোট স্তম্ভ দ্বারা আবৃত। এই ছোটখাট স্তম্ভগুলো বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের সুর সৃষ্টি করে। এই স্তম্ভগুলোর এমন নির্মাণ সজ্জার কারণ অজানা। স্তম্ভগুলোর ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, পাথর নির্মিত স্তম্ভগুলো কেবল ধাতব আকরিকের উপস্থিতির কারণে নয়, প্রচুর পরিমাণে সিলিকার কারণেও নির্দিষ্ট সুরে অনুরণিত হয়।
মুঘল যুগে হানাদাররা দীর্ঘদিন ধরে পাথরের স্তম্ভগুলোকে আগুন ধরিয়ে নষ্ট করার চেষ্টা করেন। এই কারণে এর শব্দপ্রাবল্য অনেক কমে গেছে। এছাড়া ব্রিটিশ আমলেও, দুটি স্তম্ভ কেটে পরীক্ষা করা হয়। এই স্তম্ভের ভেতরে কিছু থাকার কারণে শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে কিনা। পরীক্ষা করে দেখা যায় স্তম্ভদুটির ভেতরের অংশ ফাঁপা।