কোন ধরণের ঘ্রাণ মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রিয়

তৃতীয়পক্ষ ওয়েব- সেন্ট, পারফিউম এর গন্ধ ঘ্রাণ চোখে দেখা যায় না, শুধু অনুভব করতে হয়। যে কোনও সুগন্ধির বিশেষত্ব। শুধুমাত্র ঘামের গন্ধকে দমিয়ে সারা দিন সৌরভ ছড়ানোই নয়, সুগন্ধির রয়েছে নানারকম গুণ। মনকে ফুরফুরে রাখা থেকে শুরু করে আত্মবিশ্বাসী রাখা, রুচি আর ব্যক্তিত্বের জানান দেয় এই সুগন্ধি। এখন ঘর সুগন্ধী রাখার জন্যও এখন রুম ফ্রেশনার প্রয়োজন ।  আর তাই বহু যুগ ধরে সুগন্ধি নিয়ে মানুষের কৌতূহলের কিন্তু শেষ নেই।

রোজকার রান্না করতে গিয়ে অনেকেরই একটা বড় অংশ কাটে রান্নাঘরে। তাঁদের অনেকেরই প্রিয় ডিমভাজা আর শুকনো লঙ্কা পোড়ার ঘ্রাণ। আবার অনেক মেয়ে নেল পলিশ রিমুভারের গন্ধ ভালোবাসেন। এছাড়া কাঠের বার্নিশের গন্ধও ভালো লাগে অনেকের। কাঁঠালের ঘ্রাণ যেমন জানান দেয়, সে পেকেছে। সেরকমই কতবেলের ঘ্রাণেই জিভে জল আসে। দেশি–বিদেশি ফুলের ঘ্রাণ সবারই ভালো লাগে! তবে সম্প্রতি সুইডেনের স্টকহোমে ইউনিভার্সিটি অব সোলনার নিউরোসায়েন্স বিভাগের এক গবেষণা সাড়া ফেলেছে। কোন ঘ্রাণ মানুষের প্রিয়, বিষয়টি নিয়ে গবেষণা প্রকাশ করেছেন তারা।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে তাঁরা তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের চেষ্টায় ছিল বৈচিত্র্যময় সব মানুষের অংশগ্রহণ। থাইল্যান্ড, মেক্সিকো, ইকুয়েডর ও যুক্তরাষ্ট্রের জঙ্গল, উপকূল, মরুভূমি ঘুরে ঘুরে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করেছেন তারা। বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের ১০ প্রকার গন্ধ শুঁকতে বলা হয়। এরপর সেগুলোকে সবচেয়ে ভালো থেকে সবচেয়ে বাজে—এভাবে সাজানোর কথা বলা হয়। ভ্যানিলার মৃদু সুবাস সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেছেন প্রচুরসংখ্যক মানুষ।

এই গবেষণায় উঠে এসেছে, ঘ্রাণের ওপর দেশ, ধর্ম বা সংস্কৃতির প্রভাব রয়েছে খুবই কম। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষই একই রকমের ঘ্রাণ পছন্দ বা অপছন্দ করেন। আবার একই রকমের ঘ্রাণ প্রায় সব মানুষকেই আকর্ষণ করে। এবং তাঁরা বিভিন্ন দেশের, শ্রেণির আর বিভিন্ন পেশার মানুষ। এই গবেষণার ফলাফলে উঠে আসে, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার মানুষ কি একই ধরনের গন্ধ পছন্দ করেন, নাকি সংস্কৃতিভেদে বদলে যায় মানুষের পছন্দের সংজ্ঞা?  এত দিন মনে করা হতো, যে ব্যক্তি যেরকম সংস্কৃতিতে বাস করে, সেরকমভাবেই গড়ে ওঠে গন্ধ সম্পর্কে তার ধারণা, রুচি, পছন্দ ও অপছন্দ। তবে এই গবেষণা সেই ধারণা বাতিল করে দেয়।’

প্রসঙ্গত, মানুষের ঘ্রাণের ইন্দ্রিয় এবং পছন্দ ও অপছন্দের ওপর মানুষের সংস্কৃতির প্রভাব পড়ে মাত্র ৬%। অন্যদিকে ৫৪% এর মধ্যে প্রাধান্য পায় মানুষের ব্যক্তিগত ভালো লাগা। আর যা সবার ক্ষেত্রে প্রায় একই। অর্থাৎ এই গবেষণায় পাওয়া যায়, ঘ্রাণ সম্পর্কে সারা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষের ধারণা একইরকম।

শেয়ার করতে:

You cannot copy content of this page